পরিবেশ ও বিজ্ঞান
সপ্তম শ্রেণী
দ্বিতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন
প্রশ্নের মান ৫ নং
1. লঘু থেকে ঘণমাধ্যমে এবং ঘণমাধ্যম থেকে লঘু মাধ্যমে আলোকরশ্মির প্রতিসরণের ঘটনা চিত্রের মাধ্যমে দেখাও।
আলোর প্রতিসরণ:
যখন আলোকরশ্মি একটি স্বচ্ছ মাধ্যম থেকে অন্য একটি স্বচ্ছ মাধ্যমে প্রবেশ করে, তখন তার গতিপথের দিক পরিবর্তন হয়। এই ঘটনাকে আলোর প্রতিসরণ বলে।
১. লঘু মাধ্যম থেকে ঘনমাধ্যমে:
যখন আলোকরশ্মি লঘু মাধ্যম (যেমন: বায়ু) থেকে ঘনমাধ্যমে (যেমন: জল বা কাঁচ) প্রবেশ করে, তখন এটি অভিলম্বের দিকে বেঁকে যায়। অর্থাৎ, প্রতিসৃত রশ্মি অভিলম্বের সঙ্গে আপতন কোণের চেয়ে ছোট কোণ তৈরি করে।
বায়ু (লঘু মাধ্যম)
|
| (আপতিত রশ্মি)
| /
| /
|/
--------*-------- (দুটি মাধ্যমের বিভেদতল)
|\
| \
| \ (প্রতিসৃত রশ্মি)
| \
| `------- (অভিলম্ব)
|
জল (ঘন মাধ্যম)
২. ঘনমাধ্যম থেকে লঘু মাধ্যমে:
যখন আলোকরশ্মি ঘনমাধ্যম (যেমন: জল বা কাঁচ) থেকে লঘু মাধ্যমে (যেমন: বায়ু) প্রবেশ করে, তখন এটি অভিলম্ব থেকে দূরে সরে যায়। অর্থাৎ, প্রতিসৃত রশ্মি অভিলম্বের সঙ্গে আপতন কোণের চেয়ে বড় কোণ তৈরি করে।
জল (ঘন মাধ্যম)
|
| `------- (অভিলম্ব)
| /
| /
| /
--------*-------- (দুটি মাধ্যমের বিভেদতল)
| \
| \
| \ (প্রতিসৃত রশ্মি)
| \
বায়ু (লঘু মাধ্যম)
2. একটা বদ্ধ বর্তনীর রেখাচিত্র অঙ্কন কর- যেখানে আছে একটি ব্যাটারি, একটি বৈদ্যুতিক বাতি, একটি সুইচ এবং তার।
এখানে একটি বদ্ধ বর্তনীর রেখাচিত্র দেখানো হলো, যেখানে একটি ব্যাটারি, একটি বৈদ্যুতিক বাতি, একটি সুইচ এবং তার রয়েছে।
(+)----- [ ] -----(-)
| |
| |
[S]-----[B]
|
|
|
|
চিহ্নিত অংশ:
* [ ] : ব্যাটারি (লম্বা রেখা ধনাত্মক প্রান্ত, ছোট রেখা ঋণাত্মক প্রান্ত)
* [B] : বৈদ্যুতিক বাতি (বৃত্তের মধ্যে ক্রস)
* [S] : সুইচ (খোলা অবস্থায় দেখানো হয়েছে, বন্ধ হলে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হবে)
* ----- : তার
3. পৃথিবী বিরাট চুম্বক না হলে কী কী ঘটনা ঘটতে পারতো?
যদি পৃথিবী একটি বিশাল চুম্বক না হতো, তাহলে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটতো:
* দিক নির্ণয়ে অসুবিধা: কম্পাস কাজ করতো না, কারণ কম্পাসের কাঁটা পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে দিক নির্দেশ করে। ফলে সমুদ্রযাত্রা, বিমান চলাচল এবং ভূ-পর্যবেক্ষণে মারাত্মক অসুবিধা দেখা দিত।
* মহাজাগতিক রশ্মি থেকে অরক্ষিত: পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র সূর্য থেকে আসা বিপজ্জনক মহাজাগতিক রশ্মি এবং সৌর বায়ু কণাগুলিকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করতে বাধা দেয়। এটি না থাকলে, এই কণাগুলি সরাসরি পৃথিবীতে প্রবেশ করতো, যা জীবজগতের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর হতো এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা (যেমন রেডিও, স্যাটেলাইট) ব্যাহত করতো।
* মেরুজ্যোতির অনুপস্থিতি: মেরুজ্যোতি (Aurora Borealis এবং Aurora Australis) পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের সঙ্গে সৌর কণার মিথস্ক্রিয়ার ফল। চৌম্বক ক্ষেত্র না থাকলে এই মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক ঘটনা দেখা যেত না।
* প্রাণীজগতের মাইগ্রেশনে প্রভাব: অনেক প্রাণী (যেমন পাখি, কচ্ছপ, মাছ) তাদের মাইগ্রেশনের জন্য পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র ব্যবহার করে। এটি না থাকলে তাদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার ক্ষমতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতো।
* বায়ুমণ্ডলের ক্ষয়: সৌর বায়ু বায়ুমণ্ডলের গ্যাসগুলিকে মহাকাশে ঠেলে নিয়ে যেতে পারত, যা দীর্ঘমেয়াদে বায়ুমণ্ডলকে পাতলা করে দিত। মঙ্গল গ্রহের ক্ষেত্রে এমনটা হয়েছে বলে মনে করা হয়।
4. তড়িৎচুম্বকের শক্তি কী কী উপায়ে বাড়ানো যায়?
তড়িৎচুম্বকের শক্তি নিম্নলিখিত উপায়গুলিতে বাড়ানো যায়:
* কুণ্ডলীর পাক সংখ্যা বৃদ্ধি: তারের কুণ্ডলীর পাক সংখ্যা বাড়ালে চৌম্বক ক্ষেত্র আরও শক্তিশালী হয়। প্রতি একক দৈর্ঘ্যে যত বেশি পাক থাকে, চৌম্বক শক্তি তত বাড়ে।
* প্রবাহমাত্রা বৃদ্ধি: কুণ্ডলীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত তড়িৎপ্রবাহের মাত্রা বাড়ালে চৌম্বক ক্ষেত্র শক্তিশালী হয়।
* কুণ্ডলীর ব্যাসার্ধ কমানো: যদি কুণ্ডলীর ব্যাসার্ধ কমানো হয় (অর্থাৎ, কুণ্ডলীকে আরও টাইটভাবে পেঁচানো হয়), তাহলে চৌম্বক ক্ষেত্র আরও ঘনীভূত হয়ে শক্তিশালী হয়।
* লোহচুম্বকীয় কোর ব্যবহার: কুণ্ডলীর কেন্দ্রে একটি নরম লোহার দণ্ড (বা অন্য কোনো লোহচুম্বকীয় পদার্থ) প্রবেশ করালে তড়িৎচুম্বকের শক্তি বহুগুণ বেড়ে যায়। লোহা চৌম্বক ক্ষেত্রকে কেন্দ্রীভূত করে।
* তাপমাত্রা হ্রাস: তাপমাত্রা কমালে পরিবাহীর রোধ কমে, ফলে একই ভোল্টেজে বেশি তড়িৎপ্রবাহ হয়, যা চৌম্বক ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করে। তবে এটি ব্যবহারিকভাবে সব ক্ষেত্রে সম্ভব নয়।
5. জৈবশক্তি কিভাবে মানব জীবনে কাজে লাগানো যায়?
জৈবশক্তি (বায়োমাস এনার্জি) বিভিন্ন উপায়ে মানব জীবনে কাজে লাগানো যায়:
* বিদ্যুৎ উৎপাদন: কৃষি বর্জ্য, বনজ বর্জ্য, পৌর কঠিন বর্জ্য, এবং অন্যান্য জৈব পদার্থ পুড়িয়ে বা গ্যাসিফিকেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়।
* জ্বালানি উৎপাদন:
* বায়োফুয়েল (Biofuel): ইথানল এবং বায়োডিজেলের মতো বায়োফুয়েলগুলি ভুট্টা, আখ, সয়াবিন, জ্যাট্রোফার মতো উদ্ভিদ থেকে তৈরি হয়, যা যানবাহনের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
* বায়োগ্যাস (Biogas): গোবর, পশুপাখির বর্জ্য, এবং অন্যান্য জৈব বর্জ্য অ্যানaerobic ডাইজেশনের মাধ্যমে বায়োগ্যাস উৎপন্ন করে, যা রান্নার জ্বালানি বা জেনারেটর চালনায় ব্যবহৃত হয়।
* তাপ উৎপাদন: জৈব বর্জ্য যেমন কাঠের টুকরা, কৃষি বর্জ্য সরাসরি পুড়িয়ে শিল্প, বাণিজ্যিক বা আবাসিক এলাকায় তাপ উৎপাদন করা যায়।
* সার উৎপাদন: বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট থেকে নিঃসৃত স্লারি (residue) উন্নত মানের জৈব সার হিসেবে জমিতে ব্যবহার করা যায়, যা মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে।
* বর্জ্য ব্যবস্থাপনা: জৈবশক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কঠিন বর্জ্য এবং তরল বর্জ্যকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যায়, যা পরিবেশ দূষণ কমাতে সাহায্য করে।
* গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা: জৈবশক্তি প্রকল্পগুলি গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে এবং কৃষকদের জন্য অতিরিক্ত আয়ের উৎস তৈরি করে।
6. ফিউজ তারের কার্যনীতি লেখ
ফিউজ তার: ফিউজ তার হলো একটি নিরাপত্তা যন্ত্র যা বৈদ্যুতিক বর্তনীকে অতিরিক্ত তড়িৎপ্রবাহের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে রক্ষা করে। এটি কম গলনাঙ্কবিশিষ্ট ধাতু (যেমন: টিন ও সিসার সংকর) দিয়ে তৈরি একটি সরু তার।
কার্যনীতি:
১. সিরিজ সংযোগ: ফিউজ তারকে সবসময় বৈদ্যুতিক বর্তনীর লাইভ তারের সঙ্গে শ্রেণী সমবায়ে (সিরিজ) সংযুক্ত করা হয়।
২. নিম্ন গলনাঙ্ক: ফিউজ তারের উপাদান এমন হয় যে, এর গলনাঙ্ক কম।
৩. অতিরিক্ত প্রবাহ: যখন কোনো কারণে (যেমন: শর্ট সার্কিট বা ওভারলোড) বর্তনীতে নির্ধারিত সীমার চেয়ে বেশি তড়িৎপ্রবাহ হয়, তখন জুলের তাপীয় ফল (H = I^2RT) অনুযায়ী ফিউজ তারে অত্যধিক তাপ উৎপন্ন হয়।
৪. গলে যাওয়া ও বর্তনী ছিন্ন করা: এই অতিরিক্ত তাপের কারণে ফিউজ তারটি গলে যায় এবং বর্তনীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
৫. সুরক্ষা: এর ফলে, বাড়ির বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম বা ওয়্যারিং অতিরিক্ত তড়িৎপ্রবাহের ক্ষতি থেকে সুরক্ষিত থাকে এবং আগুন লাগার মতো দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।
৬. প্রতিস্থাপন: একবার ফিউজ তার গলে গেলে, এটি পরিবর্তন করে নতুন ফিউজ তার লাগাতে হয়।
7. একটি আদর্শ মূলের বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত কর।
আদর্শ মূলের প্রধান অংশগুলি:
* মূলত্র বা মূল টুপি (Root Cap): মূলের অগ্রভাগে অবস্থিত একটি শক্ত, টুপির মতো অংশ যা মূলের বর্ধনশীল অংশকে মাটির কণার ঘর্ষণ থেকে রক্ষা করে।
* বর্ধিষ্ণু অঞ্চল বা অগ্রস্থ ভাজক কলা অঞ্চল (Region of Meristematic Activity): মূলত্রের ঠিক পিছনের অঞ্চল, যেখানে কোষগুলি দ্রুত বিভাজিত হয় এবং মূলের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করে।
* দীর্ঘীকরণ অঞ্চল বা প্রসারণ অঞ্চল (Region of Elongation): বর্ধিষ্ণু অঞ্চলের ঠিক উপরে অবস্থিত। এই অঞ্চলের কোষগুলি দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং আকারে বড় হয়, যা মূলের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
* স্থায়ী অঞ্চল বা মূলরোম অঞ্চল (Region of Maturation / Root Hair Zone): দীর্ঘীকরণ অঞ্চলের উপরের অংশ। এই অঞ্চলে কোষগুলি পরিপক্ক হয় এবং নির্দিষ্ট কাজ করার জন্য বিভেদিত হয়। এই অঞ্চলেই অসংখ্য সূক্ষ্ম মূলরোম (Root Hairs) থাকে, যা মাটি থেকে জল ও খনিজ লবণ শোষণ করে।
* পার্শ্বীয় মূল (Lateral Roots): প্রধান মূল থেকে পাশ্বীয়ভাবে উৎপন্ন শাখা মূল।
8. একটি আদর্শ ফুলের বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত কর।
আদর্শ ফুলের প্রধান অংশগুলি (বাইরে থেকে ভেতরে):
* বৃত্যাংশ বা বৃতি (Sepal / Calyx): ফুলের সবচেয়ে বাইরের সবুজ পাতা-সদৃশ অংশ, যা কুঁড়ি অবস্থায় ফুলকে রক্ষা করে। বৃত্যাংশগুলির সমষ্টিকে বৃতি বলে।
* পাপড়ি বা দলমণ্ডল (Petal / Corolla): উজ্জ্বল রঙের, সুগন্ধযুক্ত অংশ যা পরাগরেণুকে আকর্ষণ করে। পাপড়িগুলির সমষ্টিকে দলমণ্ডল বলে।
* পুংকেশর বা পুংস্তবক (Stamen / Androecium): ফুলের পুরুষ প্রজনন অঙ্গ। প্রতিটি পুংকেশরের দুটি অংশ থাকে:
* পরাগকেশ (Anther): পরাগরেণু উৎপন্ন করে।
* পুংদণ্ড (Filament): পরাগকেশকে ধারণ করে।
* গর্ভকেশর বা স্ত্রীস্তবক (Pistil / Gynoecium / Carpel): ফুলের স্ত্রী প্রজনন অঙ্গ। প্রতিটি গর্ভকেশরের তিনটি অংশ থাকে:
* গর্ভমুণ্ড (Stigma): পরাগরেণু গ্রহণ করে, প্রায়শই আঠালো হয়।
* গর্ভদণ্ড (Style): গর্ভমুণ্ডকে ডিম্বাশয়ের সাথে যুক্ত করে।
* ডিম্বাশয় (Ovary): ডিম্বক ধারণ করে, যা পরবর্তীতে ফলে পরিণত হয়।
* পুষ্পবৃন্ত (Pedicel): ফুলকে ধারণকারী ডালপালা।
* পুষ্পাক্ষ (Thalamus / Receptacle): পুষ্পবৃন্তের উপরে অবস্থিত স্ফীত অংশ, যার উপর ফুলের অন্যান্য অংশগুলি সজ্জিত থাকে।
9. একটি আদর্শ পাতা (জবা পাতা) অঙ্কন করে, বিভিন্ন গঠনগত অংশ চিহ্নিত কর।
একটি আদর্শ জবা পাতার প্রধান গঠনগত অংশগুলি:
* পত্রমূল (Leaf Base): পাতার যে অংশটি কাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকে। জবা পাতায় প্রায়শই দুটি উপপত্র (stipule) থাকে।
* বৃন্ত বা পত্রবৃন্ত (Petiole): পত্রমূল এবং পত্রফলকের মাঝখানে অবস্থিত ডাঁটার মতো অংশ।
* পত্রফলক বা ফলক (Lamina / Leaf Blade): পাতার চ্যাপ্টা, প্রসারিত এবং সবুজ অংশ। এটিই সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ার প্রধান স্থান।
* মধ্যশিরা (Midrib): পত্রফলকের ঠিক মাঝখানে অবস্থিত প্রধান শিরা।
* পার্শ্বশিরা (Lateral Veins): মধ্যশিরা থেকে উদ্ভূত ছোট ছোট শিরা যা পত্রফলকে জালিকার মতো ছড়িয়ে থাকে।
* শিরাবিন্যাস (Venation): পাতার শিরাগুলির বিন্যাস। জবা পাতায় জালিকাকার শিরাবিন্যাস দেখা যায়।
* পত্র কিনারা (Leaf Margin): পত্রফলকের বাইরের প্রান্ত। জবা পাতার কিনারা করাতের দাঁতের মতো (serrated)।
* পত্রশীর্ষ (Leaf Apex): পত্রফলকের অগ্রভাগ।
10. মূলের তিনটি কাজ লেখো।
মূলের তিনটি প্রধান কাজ হলো:
১. জল ও খনিজ লবণ শোষণ: মূল মাটির কণাগুলির ফাঁক থেকে জল এবং তাতে দ্রবীভূত খনিজ লবণ শোষণ করে উদ্ভিদের দেহের বিভিন্ন অংশে সরবরাহ করে। এই কাজটি প্রধানত মূলরোমের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
২. উদ্ভিদকে মাটির সঙ্গে আবদ্ধ রাখা: মূল মাটি আঁকড়ে ধরে উদ্ভিদকে দৃঢ়ভাবে মাটির সঙ্গে আটকে রাখে, ঝড়ো বাতাস বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে গাছকে উপড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।
৩. খাদ্য সঞ্চয়: কিছু উদ্ভিদে (যেমন: গাজর, মূলা, বিট) মূল খাদ্য (শ্বেতসার, শর্করা) সঞ্চয় করে স্ফীত হয় এবং ভবিষ্যতের জন্য খাদ্য ভাণ্ডার হিসেবে কাজ করে।
11. শরীরে লবণ ও জল কমে গেলে, কী কী অসুবিধা হতে পারে?
শরীরে লবণ (বিশেষ করে সোডিয়াম) এবং জল কমে গেলে বা ডিহাইড্রেশন হলে নিম্নলিখিত অসুবিধাগুলি হতে পারে:
* তীব্র তৃষ্ণা: শরীর জলের অভাব পূরণের জন্য তীব্র তৃষ্ণা অনুভব করে।
* ক্লান্তি ও দুর্বলতা: পেশী দুর্বল হয়ে পড়ে এবং শরীর অত্যধিক ক্লান্ত অনুভব করে।
* মাথাব্যথা ও মাথা ঘোরা: মস্তিষ্কে রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ কমে যাওয়ায় মাথাব্যথা এবং মাথা ঘোরার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।
* শুষ্ক মুখ ও ঠোঁট: লালা উৎপাদন কমে যাওয়ায় মুখ ও ঠোঁট শুষ্ক হয়ে যায়।
* প্রস্রাবের পরিমাণ হ্রাস: কিডনি জল সংরক্ষণের চেষ্টা করে, যার ফলে প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যায় এবং প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হয়।
* রক্তচাপ কমে যাওয়া: রক্তের আয়তন কমে যাওয়ায় রক্তচাপ কমে যেতে পারে, যা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে।
* পেশী সংকোচন (Muscle Cramps): ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্যহীনতার কারণে পেশীতে টান বা খিঁচুনি হতে পারে।
* জ্ঞান হারানো বা অজ্ঞান হওয়া: গুরুতর ডিহাইড্রেশন এবং ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা মস্তিষ্কের কার্যকারিতা প্রভাবিত করে, যার ফলে বিভ্রান্তি, প্রলাপ এবং এমনকি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে।
* হৃদপিণ্ডের উপর চাপ: হৃৎপিণ্ডকে রক্ত পাম্প করার জন্য আরও বেশি কাজ করতে হয়, যা হৃদপিণ্ডের উপর চাপ ফেলে।
12. একটি চিহ্নিত চিত্র অঙ্কন করে আমের গঠনের বিভিন্ন অংশগুলি চিহ্নিত কর।
একটি আমের প্রধান গঠনগত অংশগুলি:
* বহিস্ত্বক বা এপিকার্প (Epicarp): আমের সবচেয়ে বাইরের চামড়া বা খোসা। এটি সাধারণত সবুজ থেকে হলুদ বা লাল রঙের হয়।
* মধ্যস্ত্বক বা মেসোকার্প (Mesocarp): আমের ভক্ষণযোগ্য শাঁসালো অংশ। এটি রসালো এবং মিষ্টি হয়। এটি আঁশযুক্ত বা মসৃণ হতে পারে।
* অন্তস্ত্বক বা এন্ডোকার্প (Endocarp): আমের সবচেয়ে ভেতরের শক্ত ও আঁশযুক্ত স্তর যা বীজকে ঘিরে রাখে। এটিই আঁটি বা আটি নামে পরিচিত।
* বীজ (Seed): অন্তস্ত্বকের ভিতরে অবস্থিত আমের আসল বীজ, যা থেকে নতুন গাছ জন্মায়।
প্রশ্নের মান ৩ নং
1. চুম্বকের বিভিন্ন ধর্মগুলি লেখ।
চুম্বকের প্রধান ধর্মগুলি হলো:
* আকর্ষণ ধর্ম: চুম্বক লোহা, নিকেল, কোবাল্ট এবং এদের সংকর ধাতু (যেমন ইস্পাত) দ্বারা তৈরি বস্তুকে আকর্ষণ করে।
* দিকনির্দেশক ধর্ম: একটি মুক্তভাবে ঝোলানো চুম্বক সর্বদা উত্তর-দক্ষিণ দিকে মুখ করে থাকে। চুম্বকের যে মেরু উত্তর দিকে মুখ করে থাকে তাকে উত্তর মেরু (N-pole) এবং যেটি দক্ষিণ দিকে মুখ করে থাকে তাকে দক্ষিণ মেরু (S-pole) বলে।
* মেরু ধর্ম: একটি চুম্বকের দুটি মেরু থাকে – উত্তর মেরু এবং দক্ষিণ মেরু। এই মেরুগুলিতেই চুম্বকের আকর্ষণ ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি হয়। চুম্বককে যত ছোট টুকরো করা হোক না কেন, প্রতিটি টুকরোরই দুটি মেরু থাকবে। বিচ্ছিন্নভাবে কোনো একক মেরু থাকতে পারে না।
* চুম্বকের সমমেরুতে বিকর্ষণ ও বিপরীত মেরুতে আকর্ষণ: দুটি চুম্বকের সমমেরু (যেমন N-N বা S-S) পরস্পরকে বিকর্ষণ করে, আর বিপরীত মেরু (যেমন N-S) পরস্পরকে আকর্ষণ করে। এটি চুম্বকত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।
* আবেশ ধর্ম: একটি চুম্বক তার কাছাকাছি থাকা কোনো চৌম্বক পদার্থকে সাময়িকভাবে চুম্বকে পরিণত করতে পারে। এই ঘটনাকে চৌম্বক আবেশ বলে।
2. চুম্বকত্বকে পদার্থের ভৌত ধর্ম বলা হয় কেন?
চুম্বকত্বকে পদার্থের ভৌত ধর্ম বলা হয় কারণ:
* এটি পদার্থের রাসায়নিক গঠন পরিবর্তন করে না: যখন একটি পদার্থ চুম্বক ধর্ম লাভ করে বা হারায়, তখন তার রাসায়নিক সংযুক্তি বা আণবিক গঠন পরিবর্তিত হয় না। এটি পদার্থের শুধুমাত্র ভৌত বৈশিষ্ট্য, যেমন আকর্ষণ বা বিকর্ষণ ক্ষমতা, পরিবর্তন করে।
* চুম্বকত্ব সাময়িক বা স্থায়ী হতে পারে: কিছু পদার্থকে সাময়িকভাবে চুম্বকে পরিণত করা যায় (যেমন নরম লোহা), আবার কিছু পদার্থ স্থায়ী চুম্বক হয় (যেমন ইস্পাত)। এই পরিবর্তনগুলি পদার্থের ভৌত অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত, রাসায়নিক বিক্রিয়ার সঙ্গে নয়।
* তাপমাত্রা বা আঘাতের মাধ্যমে পরিবর্তনযোগ্য: তাপ প্রয়োগে বা আঘাতের মাধ্যমে একটি চুম্বকের চুম্বকত্ব নষ্ট করা যায়, যা একটি ভৌত প্রক্রিয়া।
সংক্ষেপে, চুম্বকত্ব একটি পদার্থের অভ্যন্তরীণ গঠন বা উপাদানের পরিবর্তন না ঘটিয়ে শুধুমাত্র বাহ্যিক বা পর্যবেক্ষণযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলির পরিবর্তন ঘটায়, তাই এটি একটি ভৌত ধর্ম।
3. বর্ণালী কাকে বলে?
বর্ণালী (Spectrum): যখন সাদা আলো (যেমন সূর্যের আলো) কোনো প্রিজমের মধ্যে দিয়ে যায়, তখন তা তার উপাদান রংগুলিতে (বেগুনি, নীল, আকাশী, সবুজ, হলুদ, কমলা, লাল) ভেঙে যায়। আলোর এই বিভিন্ন রঙের সজ্জাকে বর্ণালী বলে।
মূলত, যেকোনো তরঙ্গকে যখন তার উপাদান কম্পাঙ্ক বা তরঙ্গদৈর্ঘ্যে বিভক্ত করা হয়, তখন প্রাপ্ত বিন্যাসকে বর্ণালী বলে। আলোর ক্ষেত্রে, দৃশ্যমান বর্ণালী হলো সেই অংশ যা আমরা দেখতে পাই।
4. নির্জল কোষ কি?
নির্জল কোষ (Dry Cell): নির্জল কোষ হলো এক প্রকার প্রাথমিক (Primary) তড়িৎ কোষ বা ব্যাটারি, যেখানে ইলেক্ট্রোলাইট (তড়িৎবিশ্লেষ্য) একটি আর্দ্র পেস্টের আকারে থাকে, তরল অবস্থায় নয়। এই কারণে এটিকে "শুকনো" বা "নির্জল" কোষ বলা হয়, যদিও এর ভিতরে কিছু আর্দ্রতা থাকে।
উদাহরণ: আমরা দৈনন্দিন জীবনে যে সাধারণ টর্চলাইট ব্যাটারি বা রিমোট কন্ট্রোলের ব্যাটারি ব্যবহার করি (যেমন দস্তার কার্বন কোষ বা ক্ষারীয় কোষ), সেগুলি নির্জল কোষের উদাহরণ। এগুলি একবার ব্যবহার হয়ে গেলে সাধারণত আর রিচার্জ করা যায় না।
5. চৌম্বক আবেশ কাকে বলে?
চৌম্বক আবেশ (Magnetic Induction): যখন একটি চুম্বক তার কাছাকাছি কোনো চৌম্বক পদার্থকে (যেমন লোহা, নিকেল, কোবাল্ট) আকর্ষণ করে এবং সেই চৌম্বক পদার্থটিকে সাময়িকভাবে চুম্বকে পরিণত করে, তখন এই ঘটনাকে চৌম্বক আবেশ বলে।
চৌম্বক আবেশের ফলে, আবেশিত বস্তুর যে প্রান্ত চুম্বকের কাছাকাছি থাকে, সেখানে আবিষ্ট চুম্বকের বিপরীত মেরু সৃষ্টি হয়, এবং দূরবর্তী প্রান্তে সমমেরু সৃষ্টি হয়। এই কারণেই চুম্বক সর্বদা চৌম্বক পদার্থকে আকর্ষণ করে।
6. পরিবেশবান্ধব শক্তির প্রয়োজনীয়তা লেখো।
পরিবেশবান্ধব শক্তির (Renewable Energy/Green Energy) প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম, কারণ:
* জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা: জীবাশ্ম জ্বালানি (কয়লা, তেল, গ্যাস) পোড়ানোর ফলে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয়, যা বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান কারণ। পরিবেশবান্ধব শক্তি, যেমন সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জলবিদ্যুৎ, এই গ্যাসগুলির নির্গমন কমিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহায়তা করে।
* সীমিত জীবাশ্ম জ্বালানির বিকল্প: জীবাশ্ম জ্বালানি অ-নবায়নযোগ্য এবং এর ভাণ্ডার সীমিত। পরিবেশবান্ধব শক্তি নবায়নযোগ্য, অর্থাৎ প্রকৃতিতে এর উৎস অফুরন্ত, ফলে দীর্ঘমেয়াদী জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
* পরিবেশ দূষণ হ্রাস: জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বায়ু দূষণ, জল দূষণ এবং মাটি দূষণের কারণ হয়। পরিবেশবান্ধব শক্তিগুলি ব্যবহারে এই দূষণগুলি অনেক কমে যায় বা হয় না বললেই চলে।
* স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমানো: বায়ু দূষণের কারণে সৃষ্ট শ্বাসযন্ত্রের রোগ এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা হ্রাস পায়, যা জনস্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
* শক্তি স্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা: জীবাশ্ম জ্বালানির জন্য বিদেশের উপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় উৎস থেকে শক্তি উৎপাদনে আত্মনির্ভরশীলতা বাড়ে। এটি আন্তর্জাতিক বাজারের জ্বালানির দামের ওঠানামা থেকে রক্ষা করে।
* কর্মসংস্থান সৃষ্টি: নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে বিনিয়োগ নতুন শিল্প এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে।
7. ফিউজ তার বর্তনীতে কেন ব্যবহার করা হয়?
ফিউজ তার বর্তনীতে ব্যবহার করা হয় বৈদ্যুতিক বর্তনী এবং তাতে সংযুক্ত বৈদ্যুতিক সরঞ্জামগুলিকে অতিরিক্ত তড়িৎপ্রবাহের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে রক্ষা করার জন্য।
যখন কোনো কারণে (যেমন: শর্ট সার্কিট বা ওভারলোড) বর্তনীতে নির্ধারিত সীমার চেয়ে বেশি তড়িৎপ্রবাহ হয়, তখন ফিউজ তারে অত্যধিক তাপ উৎপন্ন হয়। ফিউজ তারের উপাদান (কম গলনাঙ্কবিশিষ্ট ধাতু) এমন হয় যে এই অতিরিক্ত তাপে সেটি গলে যায় এবং বর্তনীতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এর ফলে, মূল্যবান বৈদ্যুতিক সরঞ্জামগুলি নষ্ট হওয়া থেকে বেঁচে যায় এবং আগুন লাগার মতো দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।
8. LED ব্যবহারের সুবিধা গুলি লেখো।
LED (Light Emitting Diode) ব্যবহারের প্রধান সুবিধাগুলি হলো:
* উচ্চ শক্তি দক্ষতা: LED প্রচলিত বাল্বের (যেমন ইনক্যান্ডেসেন্ট বাল্ব) তুলনায় অনেক কম বিদ্যুৎ ব্যবহার করে একই পরিমাণ আলো উৎপন্ন করে, ফলে বিদ্যুতের খরচ কমে।
* দীর্ঘস্থায়িত্ব: LED বাল্বগুলির আয়ুষ্কাল খুবই দীর্ঘ হয়, প্রায় ২৫,০০০ থেকে ৫০,০০০ ঘণ্টা বা তারও বেশি। ফলে ঘন ঘন বাল্ব পরিবর্তনের প্রয়োজন হয় না।
* কম তাপ উৎপাদন: LED খুব কম তাপ উৎপন্ন করে, যা শক্তি সাশ্রয়ের পাশাপাশি আগুন লাগার ঝুঁকিও কমায়।
* পরিবেশবান্ধব: LED-তে পারদ বা অন্যান্য ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ থাকে না এবং এটি কম কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন করে, যা পরিবেশের জন্য ভালো।
* তাৎক্ষণিক আলো: LED সুইচ অন করার সঙ্গে সঙ্গে পূর্ণ উজ্জ্বলতায় জ্বলে ওঠে, কোনো ওয়ার্ম-আপ সময়ের প্রয়োজন হয় না।
* ছোট আকার ও বহুমুখী ব্যবহার: LED ছোট হওয়ায় বিভিন্ন ডিজাইনের আলো তৈরি করা সম্ভব হয়, এবং এটি বিভিন্ন ইলেকট্রনিক গ্যাজেট, ডিসপ্লে, গাড়ির আলো ইত্যাদি বহুমুখী ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
* কম রক্ষণাবেক্ষণ খরচ: দীর্ঘস্থায়ী এবং কম তাপ উৎপাদনের কারণে LED-র রক্ষণাবেক্ষণ খরচ অনেক কম।
9. একটি মূলের কয়টি অংশ ও কি কি?
একটি আদর্শ মূলের প্রধানত চারটি অংশ থাকে:
১. মূলত্র (Root Cap): মূলের একদম অগ্রভাগে অবস্থিত, মূলকে মাটির কণা থেকে রক্ষা করে।
২. বর্ধিষ্ণু অঞ্চল (Region of Meristematic Activity): মূলত্রের ঠিক উপরে অবস্থিত, যেখানে কোষগুলি দ্রুত বিভাজিত হয়ে মূলের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি করে।
৩. দীর্ঘীকরণ অঞ্চল (Region of Elongation): বর্ধিষ্ণু অঞ্চলের উপরের অংশ, যেখানে কোষগুলি আকারে বৃদ্ধি পেয়ে মূলের দৈর্ঘ্য বাড়ায়।
৪. স্থায়ী অঞ্চল বা মূলরোম অঞ্চল (Region of Maturation / Root Hair Zone): দীর্ঘীকরণ অঞ্চলের উপরে অবস্থিত, যেখানে কোষগুলি পরিপক্ক হয় এবং মূলরোম উৎপন্ন হয়, যা জল ও খনিজ লবণ শোষণ করে।
10. একটি আদর্শ ফুলের পুংকেশর এবং গর্ভকেশরের বিভিন্ন অংশগুলির নাম লেখ।
পুংকেশর (Stamen) - ফুলের পুরুষ প্রজনন অঙ্গের অংশগুলি:
* পরাগকেশ (Anther): এটি পুংকেশরের উপরের স্ফীত অংশ, যার মধ্যে পরাগরেণু (Pollen grains) উৎপন্ন হয় এবং থাকে।
* পুংদণ্ড (Filament): এটি একটি সরু দণ্ডের মতো অংশ যা পরাগকেশকে ধারণ করে এবং পুষ্পাক্ষের সাথে যুক্ত থাকে।
গর্ভকেশর (Pistil / Carpel) - ফুলের স্ত্রী প্রজনন অঙ্গের অংশগুলি:
* গর্ভমুণ্ড (Stigma): এটি গর্ভকেশরের সবচেয়ে উপরের অংশ, যা সাধারণত আঠালো বা লোমশ হয় যাতে পরাগরেণু এর উপর আটকে থাকতে পারে। এটি পরাগরেণু গ্রহণ করে।
* গর্ভদণ্ড (Style): এটি গর্ভমুণ্ড এবং ডিম্বাশয়ের মধ্যবর্তী সরু, দণ্ডের মতো অংশ। এটি পরাগনালীকে ডিম্বাশয়ে পৌঁছাতে সাহায্য করে।
* ডিম্বাশয় (Ovary): এটি গর্ভকেশরের স্ফীত নিম্ন অংশ, যা ডিম্বক (Ovules) ধারণ করে। নিষিক্তকরণের পর ডিম্বাশয় ফলে পরিণত হয় এবং ডিম্বক বীজে পরিণত হয়।
11. পার্থক্য লেখ: মৃদভেদী অঙ্কুরোদগম এবং মৃদবর্তী অঙ্কুরোদগম।
| বৈশিষ্ট্য | মৃদভেদী অঙ্কুরোদগম (Epigeal Germination) | মৃদবর্তী অঙ্কুরোদগম (Hypogeal Germination) |
|---|---|---|
| বীজপত্র অবস্থান | বীজপত্র মাটির উপরে উঠে আসে। | বীজপত্র মাটির নিচে বা মাটির উপরে খুব সামান্য দেখা যায়। |
| হাইপোকটিল ভূমিকা | হাইপোকটিল (বীজপত্রিকাণ্ডের নিচের অংশ) দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে বীজপত্রকে উপরে ঠেলে তোলে। | হাইপোকটিল খুব কম বৃদ্ধি পায় বা বৃদ্ধি পায় না। |
| এপিকটিল ভূমিকা | এপিকটিল (বীজপত্রিকাণ্ডের উপরের অংশ) তুলনামূলক কম বৃদ্ধি পায়। | এপিকটিল (বীজপত্রিকাণ্ডের উপরের অংশ) দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে ভ্রূণমুকুলকে উপরে ঠেলে তোলে। |
| উদাহরণ | রেড়ি, তেঁতুল, কুমড়ো, সূর্যমুখী, মটর, শিম। | ধান, ছোলা, আম, গম। |
12. পার্থক্য লেখ: ব্যাপন এবং অভিস্রবণ।
| বৈশিষ্ট্য | ব্যাপন (Diffusion) | অভিস্রবণ (Osmosis) |
|---|---|---|
| মাধ্যম | তরল, গ্যাস বা কঠিন যেকোনো মাধ্যমে হতে পারে। | শুধুমাত্র তরল মাধ্যমে ঘটে। |
| অংশগ্রহণকারী | কঠিন, তরল বা গ্যাসীয় কণার উচ্চ ঘনত্ব থেকে নিম্ন ঘনত্বের দিকে চলাচল। | শুধুমাত্র দ্রাবক (সাধারণত জল) অণুর চলাচল। |
| পর্দা | কোনো পর্দার প্রয়োজন হয় না। | অর্ধভেদ্য পর্দার (Semi-permeable membrane) প্রয়োজন হয়। |
| চলাচলের দিক | উচ্চ ঘনত্ব থেকে নিম্ন ঘনত্বের দিকে। | নিম্ন ঘনত্বের দ্রবণ থেকে উচ্চ ঘনত্বের দ্রবণের দিকে (দ্রাবকের ঘনত্ব বিবেচনায়)। |
| উদাহরণ | সেন্টের গন্ধ ছড়িয়ে পড়া, জলে পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেটের রঙ ছড়িয়ে পড়া। | কিসমিস ভেজানো, উদ্ভিদের মূল দ্বারা জল শোষণ। |
13. পার্থক্য লেখ: স্বপরাগযোগ এবং ইতর পরাগযোগ।
| বৈশিষ্ট্য | স্বপরাগযোগ (Self-pollination) | ইতর পরাগযোগ (Cross-pollination) |
|---|---|---|
| পরাগর উৎস | একই ফুলের পুংকেশর থেকে একই ফুলের গর্ভমুণ্ডে। | এক ফুলের পুংকেশর থেকে অন্য গাছের অন্য ফুলের গর্ভমুণ্ডে। |
| গাছের সংখ্যা | একটি মাত্র গাছ বা একটি মাত্র ফুল। | দুটি ভিন্ন গাছ বা একই গাছের দুটি ভিন্ন ফুলের মধ্যে। |
| বাহক | সাধারণত বাহকের প্রয়োজন হয় না, বা খুবই কম প্রয়োজন হয়। | বাহকের (যেমন - বায়ু, জল, পতঙ্গ, পাখি) প্রয়োজন হয়। |
| বৈচিত্র্য | অপত্য উদ্ভিদের মধ্যে জিনগত বৈচিত্র্য কম হয়, কারণ এটি জিনগতভাবে মাতৃ উদ্ভিদের অনুরূপ। | অপত্য উদ্ভিদের মধ্যে জিনগত বৈচিত্র্য বেশি হয়, কারণ দুটি ভিন্ন উদ্ভিদের জিন মিশ্রিত হয়। |
| ফলন | ফলন ও বীজের গুণগত মান তুলনামূলকভাবে কম হতে পারে। | ফলন ও বীজের গুণগত মান তুলনামূলকভাবে ভালো হয়। |
| অভিযোজন | ফুলকে বাহকের জন্য অভিযোজিত হওয়ার প্রয়োজন হয় না। | ফুলকে বাহককে আকর্ষণ করার জন্য (যেমন - উজ্জ্বল রঙ, গন্ধ, মধু) অভিযোজিত হতে হয়। |
14. পার্থক্য লেখ: একক পত্র এবং যৌগিক পত্র।
| বৈশিষ্ট্য | একক পত্র (Simple Leaf) | যৌগিক পত্র (Compound Leaf) |
|---|---|---|
| ফলকের গঠন | একটি অখণ্ড ফলক থাকে, যা বৃন্তের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থাকে। | ফলকটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পর্ণকে (Leaflets) বিভক্ত থাকে, যা একটি প্রধান অক্ষের (র্যাকিস) সাথে যুক্ত। |
| কক্ষের কান্ড | পত্রাক্ষের কক্ষে একটিমাত্র কাক্ষিক মুকুল থাকে। | প্রতিটি পর্ণকের কক্ষে কোনো কাক্ষিক মুকুল থাকে না। প্রধান অক্ষের গোড়ায় একটি কাক্ষিক মুকুল থাকে। |
| পাতা ঝরা | পুরো পাতাটি একসঙ্গে ঝরে যায়। | প্রতিটি পর্ণক আলাদাভাবে ঝরে যেতে পারে, কিন্তু মূল পাতাটি যতক্ষণ না ঝরে, র্যাকিস থাকে। |
| উদাহরণ | আম, জবা, বট, পেয়ারা। | তেঁতুল, গোলাপ, নিম, শিমুল। |
15. আপতন কোণের মান ৬০ ডিগ্রি হলে, প্রতিফলন কোণের মান কত?
প্রতিফলনের সূত্রানুসারে, আপতন কোণ (Angle of Incidence) সর্বদা প্রতিফলন কোণ (Angle of Reflection) এর সমান হয়।
সুতরাং, যদি আপতন কোণের মান 60^\circ হয়, তাহলে প্রতিফলন কোণের মানও 60^\circ হবে।
16. পার্থক্য লেখ: নিয়মিত ও বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন।
| বৈশিষ্ট্য | নিয়মিত প্রতিফলন (Regular Reflection / Specular Reflection) | বিক্ষিপ্ত প্রতিফলন (Irregular Reflection / Diffuse Reflection) |
|---|---|---|
| পৃষ্ঠতল | মসৃণ, চকচকে এবং সমতল পৃষ্ঠে ঘটে (যেমন - আয়না, স্থির জল)। | অমসৃণ, অসমতল বা রুক্ষ পৃষ্ঠে ঘটে (যেমন - দেয়াল, কাগজ)। |
| রশ্মির গতিপথ | সমান্তরাল আপতিত রশ্মিগুলি প্রতিফলনের পর সমান্তরাল থাকে। | সমান্তরাল আপতিত রশ্মিগুলি প্রতিফলনের পর বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে। |
| প্রতিবিম্ব | স্পষ্ট ও উজ্জ্বল প্রতিবিম্ব গঠিত হয়। | কোনো স্পষ্ট প্রতিবিম্ব গঠিত হয় না, অথবা খুব অস্পষ্ট হয়। |
| উদাহরণ | আয়নায় মুখ দেখা, স্থির জলে গাছের প্রতিবিম্ব। | বইয়ের পাতা দেখা, দেয়ালে আলো পড়া। |
17. কোন চুম্বকের চুম্বকত্ব কি কি কারণে নষ্ট হয়?
একটি চুম্বকের চুম্বকত্ব নিম্নলিখিত কারণে নষ্ট হতে পারে:
* তাপ প্রয়োগ: চুম্বককে উত্তপ্ত করলে তার অণুগুলির এলোমেলো গতি বৃদ্ধি পায়, যার ফলে অণুগুলির সুবিন্যস্ত বিন্যাস ভেঙে যায় এবং চুম্বকত্ব নষ্ট হয়। একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় (কিউরি তাপমাত্রা) চুম্বক তার সমস্ত চুম্বকত্ব হারায়।
* আঘাত বা বারবার পড়ে যাওয়া: চুম্বককে বারবার আঘাত করলে বা উঁচু জায়গা থেকে ফেলে দিলে তার অভ্যন্তরীণ আণবিক সজ্জা এলোমেলো হয়ে যায়, যার ফলে চুম্বকত্ব দুর্বল হয়ে পড়ে বা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়।
* বিপরীত চৌম্বক ক্ষেত্র প্রয়োগ: একটি শক্তিশালী বিপরীত চৌম্বক ক্ষেত্রের মধ্যে রাখলে চুম্বকের নিজস্ব চৌম্বক ক্ষেত্র দুর্বল হয়ে যেতে পারে।
* বিদ্যুৎ প্রবাহ: বিকল্প তড়িৎ প্রবাহ (AC) প্রয়োগ করলে বা চুম্বকের চারপাশে তড়িৎ প্রবাহের পরিবর্তন ঘটলে চুম্বকত্ব নষ্ট হতে পারে।
* অপর্যাপ্ত সংরক্ষণ: চুম্বককে সঠিকভাবে সংরক্ষণ না করলে (যেমন - উপযুক্ত চৌম্বক রক্ষক ছাড়া দীর্ঘক্ষণ ফেলে রাখলে) ধীরে ধীরে তার চুম্বকত্ব কমতে পারে।
18. বৈদ্যুতিক বাল্বের ফিলামেন্ট দিয়ে তৈরি হওয়ার কারণ কি?
বৈদ্যুতিক বাল্বের ফিলামেন্ট (বিশেষ করে পুরনো ইনক্যান্ডেসেন্ট বাল্বের) টাংস্টেন (Tungsten) ধাতু দিয়ে তৈরি হয়। এর প্রধান কারণগুলি হলো:
* উচ্চ গলনাঙ্ক: টাংস্টেনের গলনাঙ্ক অত্যন্ত বেশি (প্রায় 3422^\circ C)। বৈদ্যুতিক বাল্বে ফিলামেন্টকে এতটাই উত্তপ্ত করা হয় যে তা থেকে আলো নির্গত হয়। উচ্চ গলনাঙ্কের কারণে টাংস্টেন উচ্চ তাপমাত্রাতেও গলে যায় না।
* উচ্চ রোধ: টাংস্টেনের রোধ তুলনামূলকভাবে বেশি, যার ফলে বিদ্যুৎ প্রবাহের সময় এটি প্রচুর তাপ উৎপন্ন করে এবং শ্বেততপ্ত হয়ে আলো বিকিরণ করে।
* উচ্চ স্থিতিস্থাপকতা ও নমনীয়তা: টাংস্টেনকে খুব পাতলা তারে পরিণত করা যায়, যা ফিলামেন্ট তৈরির জন্য অপরিহার্য।
* কম বাষ্পীভবন: উচ্চ তাপমাত্রায় টাংস্টেন খুব কম বাষ্পীভূত হয়, ফলে ফিলামেন্টের ক্ষয় কম হয় এবং বাল্বের আয়ু বৃদ্ধি পায়।
19. পরিবেশবান্ধব শক্তি কাকে বলে? এর বৈশিষ্ট্য গুলি লেখ।
পরিবেশবান্ধব শক্তি (Environmentally Friendly Energy / Green Energy / Renewable Energy): যে সকল শক্তির উৎস প্রকৃতিতে অফুরন্ত এবং যার ব্যবহার পরিবেশের উপর ন্যূনতম নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বা কোনো ক্ষতিকারক বর্জ্য বা দূষণ সৃষ্টি করে না, তাকে পরিবেশবান্ধব শক্তি বলে।
বৈশিষ্ট্যগুলি:
১. নবায়নযোগ্য: এই শক্তির উৎসগুলি প্রকৃতিতে ক্রমাগত পূরণ হতে থাকে বা অফুরন্ত (যেমন - সূর্য, বায়ু, জল, ভূ-তাপ)।
২. পরিবেশ দূষণমুক্ত: জীবাশ্ম জ্বালানির মতো কার্বন ডাই অক্সাইড বা অন্যান্য গ্রিনহাউস গ্যাস, সালফার ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড উৎপন্ন করে না, ফলে বায়ু ও জল দূষণ ঘটায় না।
৩. জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা: কার্বন নির্গমন কমিয়ে বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৪. পুনরায় ব্যবহারযোগ্য: একবার ব্যবহার করার পরও এর উৎস ফুরিয়ে যায় না এবং বারবার ব্যবহার করা যায়।
৫. দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা: জ্বালানি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা প্রদান করে, কারণ এটি আমদানির উপর নির্ভরশীল নয়।
৬. কম রক্ষণাবেক্ষণ: একবার স্থাপিত হলে এই ধরনের বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থার রক্ষণাবেক্ষণ খরচ তুলনামূলকভাবে কম হয়।
20. তিনটি জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার লেখো।
তিনটি প্রধান জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার:
১. কয়লা (Coal):
* বিদ্যুৎ উৎপাদন: তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা পুড়িয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।
* শিল্প কারখানা: ইস্পাত কারখানা, সিমেন্ট কারখানা এবং অন্যান্য শিল্পে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
* গৃহস্থালি জ্বালানি: কিছু অঞ্চলে রান্নার কাজে বা তাপ উৎপাদনের জন্য ব্যবহৃত হয় (যদিও এখন এর ব্যবহার কম)।
২. পেট্রোলিয়াম বা খনিজ তেল (Petroleum/Crude Oil):
* পরিবহন: পেট্রোল, ডিজেল, কেরোসিন, বিমান জ্বালানি হিসেবে যানবাহন, জাহাজ এবং বিমানে ব্যবহৃত হয়।
* পেট্রোকেমিক্যাল শিল্প: প্লাস্টিক, সার, কৃত্রিম তন্তু, ঔষধ, প্রসাধনী সামগ্রী ইত্যাদি তৈরিতে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
* গৃহস্থালি জ্বালানি: এলপিজি (LPG) গ্যাস রান্নার কাজে ব্যবহৃত হয়।
৩. প্রাকৃতিক গ্যাস (Natural Gas):
* বিদ্যুৎ উৎপাদন: গ্যাস-টারবাইন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়।
* গৃহস্থালি ও বাণিজ্যিক জ্বালানি: রান্নার কাজে (পাইপলাইনের মাধ্যমে) এবং শিল্প কারখানায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
* পরিবহন: সিএনজি (CNG) হিসেবে যানবাহনে ব্যবহৃত হয়, যা তুলনামূলকভাবে কম দূষণকারী।
21. উদ্ভিদের মূল আমাদের রোজগার জীবনে কি কি কাজে লাগে?
উদ্ভিদের মূল আমাদের রোজকার জীবনে বিভিন্নভাবে কাজে লাগে:
* খাদ্য উৎস: গাজর, মূলা, বিট, শালগম, মিষ্টি আলু, কন্দ (যেমন গোল আলু যদিও এটি পরিবর্তিত কাণ্ড) ইত্যাদি মূল আমরা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করি।
* ঔষধ হিসেবে: অনেক উদ্ভিদের মূল ঔষধি গুণসম্পন্ন এবং বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় (যেমন সর্পগন্ধা, অশ্বগন্ধা, আদা যদিও এটি পরিবর্তিত কাণ্ড)।
* শিল্প ক্ষেত্রে: কিছু মূল থেকে রঞ্জক বা সুগন্ধি দ্রব্য তৈরি হয়। যেমন, হলুদ (যদিও এটিও পরিবর্তিত কাণ্ড) একটি রঞ্জক ও মসলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
* ভূমি ক্ষয় রোধ: গাছের মূল মাটিকে আঁকড়ে ধরে রাখে, ফলে মাটি ক্ষয় রোধ হয় এবং ভূমিধস আটকানো যায়। এটি কৃষি জমি সংরক্ষণ এবং পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ।
* মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি: কিছু গাছের মূলে (যেমন শিম্বগোত্রীয় উদ্ভিদে) রাইজোবিয়াম ব্যাকটেরিয়া বাস করে, যা বায়ুমণ্ডলের নাইট্রোজেনকে মাটিতে আবদ্ধ করে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে।
22. সূচিছিদ্র ক্যামেরার দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।
সূচিছিদ্র ক্যামেরার (Pin-hole Camera) দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো:
১. সর্বদা উল্টা প্রতিবিম্ব গঠন: সূচিছিদ্র ক্যামেরায় সর্বদা বস্তুর একটি উল্টা এবং উলম্বভাবে উল্টা প্রতিবিম্ব গঠিত হয়। কারণ, আলো সরলরেখায় চলে এবং ছিদ্রপথে প্রবেশ করে পর্দা বা ফিল্মে উল্টোভাবে পড়ে।
২. আকারে ছোট প্রতিবিম্ব গঠন: এই ক্যামেরায় গঠিত প্রতিবিম্ব বস্তুর তুলনায় আকারে ছোট হয়। ছিদ্র যত ছোট হয়, প্রতিবিম্ব তত তীক্ষ্ণ হয়, কিন্তু উজ্জ্বলতা কমে যায়। ছিদ্র বড় হলে উজ্জ্বলতা বাড়ে কিন্তু প্রতিবিম্ব অস্পষ্ট হয়ে যায়।
23. পার্থক্য লেখ: সাধারণ চুম্বক ও তড়িৎ চুম্বক।
| বৈশিষ্ট্য | সাধারণ চুম্বক (Permanent Magnet) | তড়িৎ চুম্বক (Electromagnet) |
|---|---|---|
| গঠন | প্রাকৃতিক বা কৃত্রিমভাবে স্থায়ী চুম্বকত্ব লাভকারী পদার্থ দিয়ে তৈরি। | একটি কুণ্ডলীর মধ্যে দিয়ে তড়িৎ প্রবাহের ফলে তৈরি হয়, যার কেন্দ্রে নরম লোহা থাকে। |
| চুম্বকত্ব | স্থায়ী বা অপরিবর্তনীয় (সহজে নষ্ট হয় না)। | অস্থায়ী; কুণ্ডলীতে তড়িৎ প্রবাহ বন্ধ করলে চুম্বকত্বও নষ্ট হয়ে যায়। |
| শক্তি নিয়ন্ত্রণ | চুম্বকের শক্তি পরিবর্তন করা যায় না। | কুণ্ডলীতে তড়িৎ প্রবাহের মাত্রা পরিবর্তন করে চুম্বকের শক্তি বাড়ানো বা কমানো যায়। |
| মেরুতা নিয়ন্ত্রণ | মেরুতার দিক নির্দিষ্ট। | তড়িৎ প্রবাহের দিক পরিবর্তন করে মেরুতার দিক পরিবর্তন করা যায়। |
| উদাহরণ | দণ্ড চুম্বক, অশ্বক্ষুরাকৃতি চুম্বক। | বৈদ্যুতিক ঘণ্টা, ক্রেন, ট্রান্সফরমার। |
24. জৈব বর্জ্য থেকে কিভাবে জ্বালানি গ্যাস উৎপন্ন করার ব্যবস্থা করা হয়?
জৈব বর্জ্য থেকে জ্বালানি গ্যাস (বায়োগ্যাস) উৎপন্ন করার প্রক্রিয়াকে বায়োমিথেনেশন বা অ্যানেরোবিক ডাইজেশন (Anaerobic Digestion) বলা হয়। এই প্রক্রিয়ায় নিম্নলিখিত ধাপগুলি অনুসরণ করা হয়:
১. বর্জ্য সংগ্রহ ও প্রস্তুতি: গবাদি পশুর গোবর, কৃষি বর্জ্য (ফসল কাটার পর অবশিষ্ট অংশ), রান্নাঘরের বর্জ্য, পৌরসভার জৈব বর্জ্য ইত্যাদি সংগ্রহ করা হয়। এই বর্জ্যগুলিকে ছোট ছোট টুকরা করে জল মিশিয়ে একটি স্লারি তৈরি করা হয়।
২. ডাইজেস্টারে প্রবেশ: এই স্লারিকে একটি বায়ুরোধী পাত্রে, যাকে বায়োগ্যাস ডাইজেস্টার বা বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট বলা হয়, তার মধ্যে প্রবেশ করানো হয়।
৩. অ্যানেরোবিক ডাইজেশন: ডাইজেস্টারের ভিতরে অক্সিজেন-মুক্ত পরিবেশে (অ্যানেরোবিক অবস্থা) বিভিন্ন ধরনের অণুজীব (প্রধানত ব্যাকটেরিয়া) জৈব পদার্থগুলিকে পচন ঘটায়।
৪. গ্যাস উৎপাদন: এই পচন প্রক্রিয়ার ফলে প্রধানত মিথেন (CH_4) এবং কার্বন ডাই অক্সাইড (CO_2) গ্যাস উৎপন্ন হয়। মিথেনই হলো বায়োগ্যাসের প্রধান দাহ্য উপাদান। এছাড়াও হাইড্রোজেন সালফাইড, নাইট্রোজেন ইত্যাদি গ্যাস স্বল্প পরিমাণে থাকে।
৫. গ্যাস সংগ্রহ: উৎপন্ন গ্যাস ডাইজেস্টারের উপরের অংশে জমা হয় এবং একটি পাইপের মাধ্যমে সংগ্রহ করে রান্নার কাজে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে বা অন্যান্য জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
৬. স্লারি অপসারণ ও ব্যবহার: গ্যাস উৎপাদনের পর ডাইজেস্টারের নিচে যে অবশেষ (স্লারি) পড়ে থাকে, তা একটি উন্নত মানের জৈব সার হিসেবে জমিতে ব্যবহার করা যায়, যা মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে।
25. প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি সেল বলতে কী বোঝায়?
প্রাইমারি সেল (Primary Cell):
* যে তড়িৎ কোষগুলি একবার ব্যবহার করার পর রাসায়নিক বিক্রিয়া অপরিবর্তনীয় হওয়ায় আর রিচার্জ করা যায় না, তাদের প্রাইমারি সেল বা প্রাথমিক কোষ বলে।
* এগুলি একবার ব্যবহারের জন্য ডিজাইন করা হয় এবং একবার শক্তি ফুরিয়ে গেলে ফেলে দিতে হয়।
* উদাহরণ: দস্তার কার্বন কোষ (যেমন সাধারণ টর্চলাইট ব্যাটারি), ক্ষারীয় কোষ (যেমন রিমোট কন্ট্রোলের ব্যাটারি)।
সেকেন্ডারি সেল (Secondary Cell):
* যে তড়িৎ কোষগুলি রাসায়নিক বিক্রিয়াগুলি উভমুখী হওয়ায় বারবার রিচার্জ করে পুনরায় ব্যবহার করা যায়, তাদের সেকেন্ডারি সেল বা গৌণ কোষ বলে।
* এগুলি রিচার্জ করার জন্য বাহ্যিক বৈদ্যুতিক শক্তির উৎস প্রয়োজন হয়।
* উদাহরণ: লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি (মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ), নিকেল-ক্যাডমিয়াম ব্যাটারি, লেড-অ্যাসিড ব্যাটারি (গাড়ির ব্যাটারি)।
26. স্তম্ভমূল ও ঠেসমূল দেখা যায় এমন একটি করে উদ্ভিদের নাম লেখো।
* স্তম্ভমূল (Prop Root): বট গাছ (Ficus benghalensis)
* ঠেসমূল (Stilt Root): কেওড়া গাছ (Sonneratia apetala) বা গোলপাতা। (ধান গাছেও ঠেশমূল দেখা যায়, তবে এটি মাটির উপরে আসে না)
27. অঙ্কুরোদগমের শর্তগুলির নাম লেখো।
অঙ্কুরোদগমের জন্য তিনটি প্রধান শর্ত প্রয়োজন:
১. জল (Water): বীজের শুষ্ক বীজপত্রকে নরম করতে এবং অঙ্কুরোদগমের জন্য প্রয়োজনীয় বিপাকীয় বিক্রিয়া শুরু করতে জল অপরিহার্য।
২. তাপমাত্রা (Temperature): প্রতিটি বীজের অঙ্কুরোদগমের জন্য একটি নির্দিষ্ট অনুকূল তাপমাত্রা প্রয়োজন। খুব বেশি বা খুব কম তাপমাত্রা অঙ্কুরোদগমকে ব্যাহত করে।
৩. অক্সিজেন (Oxygen): অঙ্কুরোদগমের সময় বীজের মধ্যে সঞ্চিত খাদ্য ভাঙার জন্য শ্বসন প্রক্রিয়ার জন্য অক্সিজেন অপরিহার্য।
28. স্থায়ী অঞ্চল এবং মূলত্রের কাজ লেখ।
* স্থায়ী অঞ্চল (Region of Maturation / Root Hair Zone):
* কাজ: এই অঞ্চলটি মূলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলির মধ্যে একটি, কারণ এখানেই মূলরোম (Root Hairs) থাকে। মূলরোমগুলি মাটির কণাগুলির ফাঁক থেকে জল ও খনিজ লবণ শোষণ করে উদ্ভিদের দেহে সরবরাহ করে। এই অঞ্চলের কোষগুলি পরিপক্ক হয়ে মূলের বিভিন্ন স্থায়ী কলায় (যেমন - জাইলেম, ফ্লোয়েম) বিভেদিত হয়।
* মূলত্র (Root Cap):
* কাজ: এটি মূলের অগ্রভাগকে একটি টুপির মতো আবৃত করে রাখে। এর প্রধান কাজ হলো মূলের অগ্রস্থ ভাজক কলা অঞ্চলকে মাটির কণার ঘর্ষণ এবং আঘাত থেকে রক্ষা করা যখন মূল মাটির গভীরে প্রবেশ করে। এটি পিচ্ছিল রস ক্ষরণ করেও মূলের অগ্রগতিতে সাহায্য করে।
29. UV রশ্মির প্রভাবে কালো চামড়ার লোকেদের থেকে সাদা চামড়ার লোকেদের বেশি ক্ষতি হয় কেন?
UV (Ultraviolet) রশ্মির প্রভাবে কালো চামড়ার লোকেদের থেকে সাদা চামড়ার লোকেদের বেশি ক্ষতি হয় কারণ:
* মেলানিনের পরিমাণ: কালো চামড়ার লোকেদের ত্বকে মেলানিন নামক রঞ্জক পদার্থের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। মেলানিন একটি প্রাকৃতিক রঞ্জক যা UV রশ্মিকে শোষণ করে এবং ত্বকের কোষগুলিকে ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। এটি সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে একটি প্রাকৃতিক ঢাল হিসেবে কাজ করে।
* সূর্য পোড়ার প্রবণতা: সাদা চামড়ার লোকেদের ত্বকে মেলানিন কম থাকায় তারা UV রশ্মিকে কম শোষণ করতে পারে এবং ফলস্বরূপ সহজেই সূর্য পোড়া (Sunburn) এবং ত্বকের অন্যান্য ক্ষতির শিকার হয়। তাদের ত্বক দ্রুত লাল হয়ে যায়, ফোস্কা পড়ে এবং চুলকানি হতে পারে।
* ত্বকের ক্যানসারের ঝুঁকি: মেলানিনের সুরক্ষামূলক প্রভাবের অভাবে, সাদা চামড়ার লোকেদের ত্বকের ক্যানসার (যেমন মেলানোমা), অকাল বার্ধক্য এবং চোখের ছানি পড়ার ঝুঁকি বেশি থাকে UV রশ্মির প্রভাবে।
সংক্ষেপে, মেলানিন UV রশ্মির বিরুদ্ধে একটি কার্যকর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে এবং যাদের ত্বকে মেলানিন বেশি থাকে, তারা সূর্যের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে তুলনামূলকভাবে বেশি সুরক্ষিত থাকে।
30. একটি রশ্মি দর্পণের সঙ্গে 50 ডিগ্রী কোণে আপতিত হলে আপতিত ও প্রতিফলিত রশ্মির মধ্যে কোণ কত?
১. রশ্মিটি দর্পণের সঙ্গে 50° কোণে আপতিত হয়েছে, অর্থাৎ আপতন কোণ নয়, এটি আপতিত রশ্মি এবং দর্পণের পৃষ্ঠতলের মধ্যেকার কোণ।
২. আমরা জানি, আপতন কোণ (i) হলো আপতিত রশ্মি এবং অভিলম্বের মধ্যেকার কোণ। দর্পণের পৃষ্ঠতলের সঙ্গে অভিলম্ব 90° কোণে থাকে।
৩. সুতরাং, আপতন কোণ = 90° - 50° = 40°।
৪. প্রতিফলনের সূত্রানুসারে, আপতন কোণ (i) = প্রতিফলন কোণ (r)।
অতএব, প্রতিফলন কোণ (r) = 40°।
৫. আপতিত রশ্মি এবং প্রতিফলিত রশ্মির মধ্যে কোণ = আপতন কোণ + প্রতিফলন কোণ = 40° + 40° = 80°।
সুতরাং, আপতিত ও প্রতিফলিত রশ্মির মধ্যে কোণ হবে 80°।
31. 'আকর্ষণ অপেক্ষা বিকর্ষণই চুম্বকত্বের প্রকৃষ্ট প্রমাণ'- ব্যাখ্যা কর।
এই উক্তিটি চুম্বকত্বের একটি মৌলিক নীতিকে তুলে ধরে এবং এর কারণ নিম্নরূপ:
* আকর্ষণের সমস্যা: একটি চুম্বক শুধুমাত্র চৌম্বক পদার্থকেই (যেমন লোহা, নিকেল) আকর্ষণ করে না, বরং এটি একটি অ-চুম্বক (যেমন কাঁচ বা কাঠ) দ্বারাও চৌম্বক আবেশের মাধ্যমে আকর্ষণ সৃষ্টি করতে পারে যদি সেই অ-চুম্বকটি লোহার মতো পদার্থ হয়। অর্থাৎ, একটি চুম্বক একটি লোহাকে আকর্ষণ করলে সেই লোহাটি চুম্বক না-ও হতে পারে। একইভাবে, একটি চুম্বক আরেকটি চুম্বককে আকর্ষণ করতে পারে, কিন্তু এটি আকর্ষণ ছাড়াও আবেশের কারণেও হতে পারে।
* বিকর্ষণের নিশ্চিততা: দুটি বস্তুর মধ্যে তখনই বিকর্ষণ সম্ভব যখন উভয় বস্তুই চুম্বক হয় এবং তাদের সমমেরু (যেমন উত্তর-উত্তর বা দক্ষিণ-দক্ষিণ) পরস্পরের কাছাকাছি আসে। একটি অ-চুম্বক পদার্থ কখনোই একটি চুম্বকের দ্বারা বিকর্ষিত হয় না।
সুতরাং, যদি দুটি বস্তুর মধ্যে বিকর্ষণ দেখা যায়, তাহলে এটি নিঃসন্দেহে প্রমাণ করে যে উভয় বস্তুই চুম্বক। কিন্তু যদি আকর্ষণ দেখা যায়, তাহলে বস্তুটি চুম্বক হতেও পারে, আবার নাও হতে পারে (চৌম্বক পদার্থও হতে পারে)। তাই বিকর্ষণই চুম্বকত্বের প্রকৃষ্ট প্রমাণ।
32. ইলেকট্রিক সরঞ্জামে চিনেমাটি বা প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয় কেন?
ইলেকট্রিক সরঞ্জামে চিনেমাটি (Porcelain) বা প্লাস্টিক ব্যবহার করার প্রধান কারণ হলো এগুলি তড়িৎ অপরিবাহী বা অন্তরক (Insulators)।
* তড়িৎ অপরিবাহিতা: চিনেমাটি এবং প্লাস্টিক বিদ্যুৎ পরিবহনে অক্ষম। এর ফলে:
* শক্ থেকে সুরক্ষা: বিদ্যুৎ পরিবাহী তার বা যন্ত্রাংশগুলিকে ঘিরে রেখে এই পদার্থগুলি ব্যবহারকারীকে বৈদ্যুতিক শক্ থেকে রক্ষা করে।
* শর্ট সার্কিট রোধ: যন্ত্রাংশের মধ্যে বিদ্যুৎ প্রবাহের পথকে সীমাবদ্ধ রাখে, যাতে অবাঞ্ছিত শর্ট সার্কিট না হয়।
* নিরাপত্তা: ফিউজ হোল্ডার, সুইচবোর্ড, প্লাগ, তারের আবরণ ইত্যাদি তৈরিতে এগুলি ব্যবহার করা হয়, যা বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমায়।
* উচ্চ তাপমাত্রা সহ্য ক্ষমতা (চিনেমাটির ক্ষেত্রে): চিনেমাটি উচ্চ তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে, যা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি যেখানে তাপ উৎপন্ন হয় (যেমন ফিউজ) সেখানে এটি ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। প্লাস্টিকের ক্ষেত্রে তাপ সহনশীলতা তুলনামূলকভাবে কম।
* ক্ষয়রোধী: এগুলি জল, রাসায়নিক বা আর্দ্রতার প্রভাবে সহজে ক্ষয়প্রাপ্ত হয় না, যা যন্ত্রপাতির দীর্ঘস্থায়িত্ব নিশ্চিত করে।
33. বৈদ্যুতিক বাতির ফিলামেন্টের কি কি বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত?
বৈদ্যুতিক বাতির ফিলামেন্টের (বিশেষ করে ইনক্যান্ডেসেন্ট বাল্বের টাংস্টেন ফিলামেন্ট) নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি থাকা উচিত:
* উচ্চ গলনাঙ্ক: ফিলামেন্টের গলনাঙ্ক অত্যন্ত উচ্চ হতে হবে, যাতে এটি শ্বেততপ্ত অবস্থায় (প্রায় 2700^\circ C) গলে না যায়।
* উচ্চ রোধ: ফিলামেন্টের রোধ উচ্চ হতে হবে যাতে বিদ্যুৎ প্রবাহের সময় এটি প্রচুর তাপ উৎপন্ন করে এবং শ্বেততপ্ত হয়ে আলো বিকিরণ করে।
* কম বাষ্পীভবন: উচ্চ তাপমাত্রায় ফিলামেন্ট থেকে পদার্থের বাষ্পীভবন খুব কম হতে হবে, যাতে ফিলামেন্ট সহজে ক্ষয় না হয় এবং বাল্বের আয়ু বৃদ্ধি পায়।
* উচ্চ স্থিতিস্থাপকতা ও নমনীয়তা: এটিকে খুব পাতলা তারে পরিণত করা সম্ভব হতে হবে যাতে ফিলামেন্টকে কুঁকড়ে (coil) কম জায়গায় বেশি দৈর্ঘ্য রাখা যায়।
* দীর্ঘস্থায়িত্ব: আলো প্রদানের সময় যেন ফিলামেন্ট দ্রুত নষ্ট না হয়ে যায়।
34. বায়ু প্রবাহের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে তড়িৎ উৎপন্ন করার জন্য সমুদ্রের ধারে হাজার বায়ুকল লাগালে কি কি সমস্যা হতে পারে?
সমুদ্রের ধারে হাজার বায়ুকল (Wind Turbines) লাগিয়ে বায়ু শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করার অনেক সুবিধা থাকলেও কিছু সম্ভাব্য সমস্যাও রয়েছে:
* পরিবেশগত প্রভাব:
* পাখি ও বাদুড়ের মৃত্যু: বায়ুকলের ঘূর্ণায়মান ব্লেডের আঘাতে অনেক সময় পাখি ও বাদুড়ের মৃত্যু হয়, যা জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর।
* সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের উপর প্রভাব: অফশোর বায়ুকলের ভিত্তি স্থাপনে সামুদ্রিক জীবনের (মাছ, সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী) বাসস্থান ব্যাহত হতে পারে।
* শব্দ দূষণ: বায়ুকলের ঘূর্ণন থেকে উৎপন্ন শব্দ স্থানীয় প্রাণী এবং মানুষের জন্য (যদি কাছাকাছি জনবসতি থাকে) বিরক্তিকর হতে পারে।
* দৃশ্য দূষণ: বিশাল আকারের বায়ুকলগুলি প্রাকৃতিক দৃশ্যের সৌন্দর্য নষ্ট করতে পারে।
* আর্থিক ও কারিগরি সমস্যা:
* উচ্চ প্রাথমিক ব্যয়: বায়ুকল স্থাপন, বিশেষ করে অফশোর বায়ুকলের জন্য বিশাল বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়।
* রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়: সমুদ্রের ক্ষারীয় পরিবেশ এবং প্রতিকূল আবহাওয়ায় বায়ুকলগুলির রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়বহুল ও জটিল হতে পারে।
* আঁকাবাঁকা বিদ্যুৎ উৎপাদন: বাতাসের গতি সব সময় একরকম থাকে না, ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনও অনিয়মিত হয়, যা গ্রিড ব্যবস্থাপনায় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
* অন্যান্য সমস্যা:
* জাহাজ চলাচল ও নৌপরিবহনে বাধা: অফশোর বায়ুকলগুলি জাহাজ চলাচল বা মাছ ধরার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
* রাডার ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ: বায়ুকলগুলি রাডার এবং অন্যান্য যোগাযোগ ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করতে পারে।
35. পরিবেশবান্ধব শক্তি ব্যবহার বাড়ানো উচিত কেন?
পরিবেশবান্ধব শক্তি (নবায়নযোগ্য শক্তি) ব্যবহার বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি, কারণ:
* জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা: জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর ফলে যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয়, তা বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রধান কারণ। পরিবেশবান্ধব শক্তি কার্বন নির্গমন অনেক কমিয়ে দেয় বা একেবারেই করে না, ফলে পৃথিবীর উষ্ণায়ন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়।
* পরিবেশ দূষণ হ্রাস: বায়ু দূষণ, জল দূষণ, এবং মাটি দূষণ কমানোর জন্য পরিবেশবান্ধব শক্তি অপরিহার্য। এটি স্বাস্থ্যের ঝুঁকি কমায় এবং প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রকে রক্ষা করে।
* সম্পদের সীমাবদ্ধতা: জীবাশ্ম জ্বালানি (কয়লা, তেল, গ্যাস) অ-নবায়নযোগ্য এবং এর ভাণ্ডার সীমিত। এই শক্তি উৎসগুলি ফুরিয়ে গেলে ভবিষ্যতের জন্য জ্বালানি সংকট দেখা দিতে পারে। নবায়নযোগ্য শক্তি অফুরন্ত, ফলে দীর্ঘমেয়াদী জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
* জ্বালানি স্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা: তেল ও গ্যাসের জন্য বিদেশের উপর নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় উৎস থেকে শক্তি উৎপাদন করা গেলে অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বাড়ে এবং আন্তর্জাতিক বাজারের জ্বালানির দামের ওঠানামা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
* নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি: নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে বিনিয়োগ নতুন শিল্প এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবনে উৎসাহ দেয়, যা নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির সুযোগ তৈরি করে।
* স্থিতিশীল উন্নয়ন: পরিবেশবান্ধব শক্তি টেকসই উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য, যা বর্তমান প্রজন্মের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চাহিদার সঙ্গে আপোস করে না।
36. একটি কাতলা মাছকে সমুদ্রের জলে ছেড়ে দিলে, মাছটি শুকিয়ে মারা যাবে কেন?
একটি কাতলা মাছকে সমুদ্রের জলে ছেড়ে দিলে সেটি শুকিয়ে মারা যাবে কারণ মিষ্টি জলের মাছের দেহ সামুদ্রিক জলের পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারে না, বিশেষ করে অভিস্রবণ প্রক্রিয়ার (Osmosis) কারণে।
* অভিস্রবণ: অভিস্রবণ হলো একটি অর্ধভেদ্য পর্দার মধ্য দিয়ে কম ঘনত্বের দ্রবণ থেকে বেশি ঘনত্বের দ্রবণের দিকে দ্রাবকের (সাধারণত জল) চলাচল।
* কাতলা মাছের শারীরতত্ত্ব: কাতলা মাছ মিষ্টি জলের (নিম্ন লবণাক্ততার) পরিবেশে বসবাসকারী। তাদের দেহের তরলের ঘনত্ব বাইরের মিষ্টি জলের ঘনত্বের চেয়ে বেশি। তাই জল অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় ক্রমাগত তাদের দেহে প্রবেশ করে। অতিরিক্ত জলকে তারা ঘন ঘন মূত্র ত্যাগের মাধ্যমে শরীর থেকে বের করে দেয় এবং দেহের লবণাক্ততা স্বাভাবিক রাখে।
* সামুদ্রিক জলে প্রভাব: সমুদ্রের জলে লবণের ঘনত্ব (উচ্চ লবণাক্ততা) কাতলা মাছের দেহের ভেতরের তরলের ঘনত্বের চেয়ে অনেক বেশি। যখন কাতলা মাছকে সমুদ্রের জলে ছাড়া হয়, তখন অভিস্রবণ প্রক্রিয়ার নিয়মানুসারে, মাছের দেহের কোষ থেকে জল বাইরের সমুদ্রের বেশি ঘনত্বের জলের দিকে বের হয়ে যেতে শুরু করে।
* জলশূন্যতা: এভাবে ক্রমাগত জল হারানোর ফলে মাছের শরীর দ্রুত জলশূন্য হয়ে পড়ে (ডিহাইড্রেশন), যা তার শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াগুলিকে ব্যাহত করে এবং শেষ পর্যন্ত মাছটি শুকিয়ে মারা যায়।
সামুদ্রিক মাছের শরীর আবার উল্টো প্রক্রিয়ায় অভিস্রবণ নিয়ন্ত্রণ করে। তারা ক্রমাগত সমুদ্রের জল পান করে এবং অতিরিক্ত লবণকে ফুলকার মাধ্যমে বা ঘন মূত্রের সাহায্যে শরীর থেকে বের করে দেয়।
37. পুকুর বা নদীর পাড়ে গাছ লাগানো হয় কেন?
পুকুর বা নদীর পাড়ে গাছ লাগানোর একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কারণ রয়েছে:
* ভূমি ক্ষয় রোধ: গাছের মূল মাটিকে আঁকড়ে ধরে রাখে, যার ফলে জলস্রোত বা ঢেউয়ের আঘাতে পাড়ের মাটি ধুয়ে যায় না। এটি ভূমিধস এবং পাড় ভেঙে যাওয়া প্রতিরোধ করে।
* জল দূষণ রোধ: গাছের পাতা ও ডালপালা থেকে ঝরে পড়া অংশ জলে মিশে জলজ প্রাণীদের খাদ্য যোগায়। এছাড়াও, গাছপালা জমির উপরিভাগ থেকে বয়ে আসা দূষণ পদার্থ (যেমন - সার, কীটনাশক) শোষণে সাহায্য করে, যা জলের গুণগত মান উন্নত করে।
* ছায়া প্রদান: গাছের ছায়া জলকে সরাসরি সূর্যের আলো থেকে রক্ষা করে, যা জলের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং জলজ উদ্ভিদের অত্যধিক বৃদ্ধি (যেমন শৈবাল ব্লুম) রোধ করে।
* জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ: গাছপালা বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, পতঙ্গ এবং অন্যান্য প্রাণীর আশ্রয়স্থল ও খাদ্যের উৎস হিসেবে কাজ করে, যা স্থানীয় জীববৈচিত্র্যকে সমৃদ্ধ করে।
* পরিবেশের ভারসাম্য: গাছের সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে এবং অক্সিজেন ত্যাগ করে, যা বায়ুমণ্ডলের ভারসাম্য বজায় রাখে।
* আবাসস্থল সৃষ্টি: মাছ এবং অন্যান্য জলজ প্রাণীর ডিম পাড়া ও ছোট মাছের আশ্রয়স্থল হিসেবে গাছের শিকড় এবং ঝোপঝাড় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
38. পাতার কাজগুলি লেখ।
পাতার প্রধান কাজগুলি হলো:
১. সালোকসংশ্লেষ (Photosynthesis): এটি পাতার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ। পাতায় ক্লোরোফিল থাকে, যা সূর্যালোক শোষণ করে। এই শক্তি ব্যবহার করে পাতা কার্বন ডাই অক্সাইড এবং জল থেকে খাদ্য (শর্করা) তৈরি করে এবং অক্সিজেন ত্যাগ করে।
২. প্রস্বেদন (Transpiration): পাতা থেকে অতিরিক্ত জল বাষ্পাকারে পরিবেশে মুক্ত হয়। এই প্রক্রিয়া জল শোষণ এবং উদ্ভিদদেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
৩. গ্যাসীয় আদান-প্রদান (Gaseous Exchange): পাতার পৃষ্ঠে অবস্থিত পত্ররন্ধ্র (stomata) দিয়ে বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড গ্রহণ এবং অক্সিজেন ত্যাগ হয়, যা সালোকসংশ্লেষ ও শ্বসনের জন্য অপরিহার্য।
৪. খাদ্য সঞ্চয় (Food Storage): কিছু উদ্ভিদের (যেমন - পেঁয়াজ, রসুন, পাথরকুচি) পাতা খাদ্য সঞ্চয় করে স্ফীত হয়।
৫. শ্বসন (Respiration): সালোকসংশ্লেষের পাশাপাশি পাতাতেও শ্বসন প্রক্রিয়া ঘটে, যেখানে উৎপাদিত খাদ্য ভেঙে শক্তি উৎপন্ন হয়।
৬. অঙ্গজ জনন (Vegetative Propagation): কিছু উদ্ভিদ (যেমন - পাথরকুচি) পাতার কিনারায় কাক্ষিক মুকুল তৈরি করে, যা থেকে নতুন চারা গাছের জন্ম হয়।
39. একটি দন্ডচুম্বকের জ্যামিতিক দৈর্ঘ্য 10 cm হলে, চুম্বকটির চৌম্বক দৈর্ঘ্য কত নির্ণয় কর।
একটি দন্ডচুম্বকের চৌম্বক দৈর্ঘ্য (Magnetic Length) তার জ্যামিতিক দৈর্ঘ্যের (Geometric Length) প্রায় 0.86 গুণ হয়।
সুতরাং, যদি দন্ডচুম্বকের জ্যামিতিক দৈর্ঘ্য 10 \text{ cm} হয়,
তাহলে চৌম্বক দৈর্ঘ্য = 0.86 \times \text{জ্যামিতিক দৈর্ঘ্য}
চৌম্বক দৈর্ঘ্য = 0.86 \times 10 \text{ cm}
চৌম্বক দৈর্ঘ্য = 8.6 \text{ cm}
অতএব, চুম্বকটির চৌম্বক দৈর্ঘ্য হবে 8.6 \text{ cm}।
40. সমুদ্রের মাছ কীভাবে নিজের দেহের জলের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখে?
সমুদ্রের মাছগুলি তাদের দেহের জলের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখার জন্য বেশ কিছু অভিযোজন বা কৌশল অবলম্বন করে, কারণ বাইরের সমুদ্রের জলের ঘনত্ব (লবণাক্ততা) তাদের দেহের ভেতরের তরলের ঘনত্বের চেয়ে বেশি, যার ফলে অভিস্রবণ প্রক্রিয়ায় তাদের শরীর থেকে জল বেরিয়ে যাওয়ার প্রবণতা থাকে:
* নিয়মিত সমুদ্রের জল পান করা: সমুদ্রের মাছগুলি ক্রমাগত সমুদ্রের জল পান করে তাদের দেহের জলের ঘাটতি পূরণ করে।
* ফুলকার মাধ্যমে অতিরিক্ত লবণ নির্গমন: তাদের ফুলকায় বিশেষ ধরনের কোষ থাকে যা সক্রিয়ভাবে অতিরিক্ত লবণকে (বিশেষত সোডিয়াম ও ক্লোরাইড আয়ন) রক্ত থেকে সরাসরি বাইরের জলে ছেড়ে দেয়।
* কম পরিমাণে ঘন মূত্র ত্যাগ: তারা কিডনির মাধ্যমে খুব কম পরিমাণে এবং অত্যন্ত ঘন মূত্র ত্যাগ করে, যাতে শরীর থেকে জলের অপচয় ন্যূনতম হয়। এর ফলে তারা দেহের প্রয়োজনীয় জল ধরে রাখতে পারে।
* ত্বকের ভেদ্যতা কম: তাদের ত্বকের ভেদ্যতা কম হয়, যা জল হারানোর পরিমাণকে সীমিত করে।
এই কৌশলগুলির মাধ্যমে সামুদ্রিক মাছগুলি তাদের দেহের ভেতরের জল এবং লবণের ভারসাম্য বজায় রাখে (Osmo-regulation)।
41. ১.২২ মিটার লম্বা একজন বালক একটি বড় আয়না থেকে ১.৫ মিটার দূরে দাঁড়িয়ে আছে, বালকটির কাছে তার প্রতিবিম্বের উচ্চতা কত? প্রতিবিম্ব তার থেকে কত দূরে অবস্থিত?
১. প্রতিবিম্বের উচ্চতা:
সমতল দর্পণে গঠিত প্রতিবিম্বের উচ্চতা সর্বদা বস্তুর উচ্চতার সমান হয়।
সুতরাং, বালকটির উচ্চতা 1.22 \text{ মিটার} হলে, তার প্রতিবিম্বের উচ্চতাও 1.22 \text{ মিটার} হবে।
২. প্রতিবিম্বের দূরত্ব:
সমতল দর্পণে গঠিত প্রতিবিম্বের দূরত্ব দর্পণ থেকে বস্তুর দূরত্বের সমান হয়।
বালকটি আয়না থেকে 1.5 \text{ মিটার} দূরে দাঁড়িয়ে আছে।
সুতরাং, প্রতিবিম্বটি আয়নার পিছনে 1.5 \text{ মিটার} দূরে গঠিত হবে।
বালকটির কাছে তার প্রতিবিম্বের মোট দূরত্ব হবে: বালক থেকে আয়নার দূরত্ব + আয়না থেকে প্রতিবিম্বের দূরত্ব
= 1.5 \text{ মিটার} + 1.5 \text{ মিটার} = 3 \text{ মিটার}।
সুতরাং, বালকটির কাছে তার প্রতিবিম্বের উচ্চতা হবে 1.22 \text{ মিটার} এবং প্রতিবিম্ব তার থেকে 3 \text{ মিটার} দূরে অবস্থিত হবে।
একটি চুম্বকের চিত্র অঙ্কন করে চৌম্বক দৈর্ঘ্য ও উদাসীন অঞ্চল চিহ্নিত কর।
42. একটি দণ্ড চুম্বকের চিত্র এঁকে নিম্নলিখিত অংশগুলি চিহ্নিত কর।
* উত্তর মেরু (N-pole): দন্ডের এক প্রান্তে 'N' চিহ্ন দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে
* দক্ষিণ মেরু (S-pole): দন্ডের অন্য প্রান্তে 'S' চিহ্ন দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে
* জ্যামিতিক দৈর্ঘ্য (Geometric Length): দন্ডের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত সরলরৈখিক দূরত্ব।
* চৌম্বক দৈর্ঘ্য (Magnetic Length): উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু পর্যন্ত সরলরৈখিক দূরত্ব (এটি জ্যামিতিক দৈর্ঘ্যের থেকে সামান্য কম হয়, প্রায় 0.86 গুণ)। চিত্রে মেরুগুলির অবস্থান দন্ডের প্রান্ত থেকে সামান্য ভেতরে দেখানো হয়েছে।
* উদাসীন অঞ্চল (Neutral Zone): দন্ডের মাঝখানের যে অঞ্চলে চুম্বকের আকর্ষণ ক্ষমতা প্রায় থাকে না বললেই চলে, সেই অংশটিকে উদাসীন অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত ককরা হয়েছে। এটি দন্ডের মধ্যবিন্দু বরাবর অবস্থিত।
43. কাণ্ডের দুটি কাজ লেখ।
কাণ্ডের দুটি প্রধান কাজ হলো:
১. জল ও খাদ্য পরিবহন: কাণ্ড মূল দ্বারা শোষিত জল ও খনিজ লবণকে জাইলেম কলার মাধ্যমে পাতার দিকে পরিবহন করে। একইসাথে, পাতায় প্রস্তুতকৃত খাদ্য ফ্লোয়েম কলার মাধ্যমে উদ্ভিদের বিভিন্ন অংশে (যেমন - মূল, ফল, ফুল) পরিবহন করে।
২. উদ্ভিদকে অবলম্বন প্রদান: কাণ্ড গাছকে সোজাভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে সাহায্য করে এবং পাতা, ফুল ও ফলকে ধারণ করে। এটি উদ্ভিদের কাঠামোগত সহায়তা প্রদান করে যাতে তারা আলো পায় এবং সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া কার্যকরভাবে সম্পন্ন করতে পারে।
44. সাপ কেন প্রায়ই জিভ বের করে?
সাপ প্রায়ই জিভ বের করে কারণ এটি তাদের গন্ধ এবং স্বাদ গ্রহণের প্রধান উপায়। সাপের জিভ হলো একটি বিশেষায়িত অঙ্গ যা পরিবেশ থেকে বায়ু কণা এবং রাসায়নিক সংকেত সংগ্রহ করে। এই প্রক্রিয়াকে কেমোসেন্সরি ফাংশন (Chemosensory function) বলে।
যখন সাপ জিভ বের করে, তখন এটি বাতাসের অণুগুলিকে সংগ্রহ করে এবং তারপর জিভটি মুখের ভিতরে নিয়ে যায়, যেখানে এটি জ্যাকবসন'স অর্গ্যান (Jacobson's Organ) বা ভম্যারোনাসাল অর্গ্যানে (Vomeronasal Organ) স্পর্শ করে। এই অঙ্গটি সাপের মুখের উপরের অংশে অবস্থিত এবং এটি গন্ধের অণুগুলিকে বিশ্লেষণ করে সাপকে তার পরিবেশ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেয়।
এর মাধ্যমে সাপ:
* শিকার সনাক্ত করে: সম্ভাব্য শিকারের গন্ধ অনুসরণ করে।
* শিকারের অবস্থান নির্ণয় করে: অন্ধকারের মধ্যেও শিকারের গতিবিধি বুঝতে পারে।
* সঙ্গী খুঁজে বের করে: ফেরোমোনের মাধ্যমে সঙ্গীর অবস্থান জানতে পারে।
* শত্রু সনাক্ত করে: বিপদ অনুমান করতে পারে।
* পরিবেশ অন্বেষণ করে: নতুন এলাকায় প্রবেশ করলে পারিপার্শ্বিক সম্পর্কে ধারণা লাভ করে।
সংক্ষেপে, সাপ জিভ বের করে তার পরিবেশ "আঁকে" এবং এটি তাদের বেঁচে থাকার জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় সংবেদনশীল কৌশল।
45. ১ জুল বলতে কী বোঝায়?
১ জুল (Joule) হলো আন্তর্জাতিক একক পদ্ধতিতে (SI) কাজের (Work) বা শক্তির (Energy) একক।
১ জুল কাজ বলতে বোঝায়: যদি কোনো বস্তুর উপর ১ নিউটন (Newton) বল প্রয়োগ করার ফলে বস্তুটি বলের দিকে ১ মিটার (Meter) দূরত্ব অতিক্রম করে, তাহলে সম্পাদিত কাজের পরিমাণকে ১ জুল বলা হয়।
গাণিতিকভাবে: 1 \text{ Joule} = 1 \text{ Newton} \times 1 \text{ Meter}
উদাহরণস্বরূপ, ১ নিউটন ওজনের একটি আপেলকে ১ মিটার উপরে তুলতে প্রায় ১ জুল কাজ করা হয়।
46. তড়িৎ প্রবাহের তাপীয় ফল বলতে কী বোঝায়?
তড়িৎ প্রবাহের তাপীয় ফল (Heating Effect of Electric Current): যখন কোনো পরিবাহীর (যেমন তার বা রোধক) মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রবাহ হয়, তখন পরিবাহীর রোধের (Resistance) কারণে কিছু বৈদ্যুুতিক শক্তি তাপ শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। এই ঘটনাকে তড়িৎ প্রবাহের তাপীয় ফল বা জুলের তাপীয় ফল (Joule Heating) বলে।
ব্যাখ্যা: পরিবাহীর মধ্য দিয়ে যখন ইলেকট্রনগুলি প্রবাহিত হয়, তখন তারা পরিবাহীর পরমাণু বা অণুগুলির সাথে বারবার সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এই সংঘর্ষের ফলে ইলেকট্রনগুলির গতিশক্তি পরমাণুগুলিতে স্থানান্তরিত হয়, যার ফলে পরমাণুগুলির কম্পন বৃদ্ধি পায় এবং পরিবাহীর তাপমাত্রা বেড়ে যায়। উৎপন্ন তাপের পরিমাণ তড়িৎ প্রবাহের বর্গ, রোধ এবং সময়, এই তিনটির গুণফলের সমানুপাতিক (H = I^2RT, যেখানে H = উৎপন্ন তাপ, I = তড়িৎ প্রবাহ, R = রোধ, T = সময়)।
উদাহরণ: বৈদ্যুতিক হিটার, কেটল, ইস্ত্রি, বাল্ব (ফিলামেন্ট) ইত্যাদি তড়িৎ প্রবাহের তাপীয় ফলের নীতির উপর কাজ করে।
47. বৃষ্টির পর বিকেলের আকাশে রংধনু দেখা যায় কেন?
বৃষ্টির পর বিকেলের আকাশে রংধনু দেখা যাওয়ার কারণ হলো আলোর বিচ্ছুরণ (Dispersion of Light), প্রতিসরণ (Refraction) এবং অভ্যন্তরীণ পূর্ণ প্রতিফলন (Total Internal Reflection)।
* জলবিন্দু প্রিজম হিসেবে কাজ করে: বৃষ্টির পর বায়ুমণ্ডলে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলের কণা ভেসে থাকে। যখন সূর্যের সাদা আলো এই জলের কণাগুলির উপর পড়ে, তখন প্রতিটি জলের কণা একটি ক্ষুদ্র প্রিজমের মতো কাজ করে।
* আলোর বিচ্ছুরণ: সাদা আলো বিভিন্ন রঙের আলোর (বেগুনি, নীল, আকাশী, সবুজ, হলুদ, কমলা, লাল) সমন্বয়ে গঠিত। যখন সাদা আলো জলের কণার মধ্য দিয়ে প্রবেশ করে (প্রতিসরণ হয়), তখন প্রতিটি রঙের আলো তার নিজস্ব তরঙ্গদৈর্ঘ্য অনুযায়ী সামান্য ভিন্ন কোণে বেঁকে যায় (বিচ্ছুরণ)। বেগুনি আলোর বিচ্যুতি সবচেয়ে বেশি হয়, আর লাল আলোর বিচ্যুতি সবচেয়ে কম হয়।
* অভ্যন্তরীণ পূর্ণ প্রতিফলন: বিচ্ছুরিত আলো যখন জলের কণার ভিতরের পৃষ্ঠে পৌঁছায়, তখন তা অভ্যন্তরীণ পূর্ণ প্রতিফলনের শিকার হয়।
* দ্বিতীয়বার প্রতিসরণ ও নির্গমন: অভ্যন্তরীণ পূর্ণ প্রতিফলনের পর আলো আবার জলের কণার বাইরের পৃষ্ঠ থেকে বায়ুতে বেরিয়ে আসে (দ্বিতীয়বার প্রতিসরণ)।
* রংধনু গঠন: এই প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন রঙের আলো বিভিন্ন কোণে আমাদের চোখে এসে পৌঁছায়। আমরা যখন সূর্যের বিপরীত দিকে তাকাই, তখন আমরা এই বিচ্ছুরিত এবং প্রতিফলিত আলোর একটি অর্ধবৃত্তাকার বর্ণালী দেখতে পাই, যাকে আমরা রংধনু বলি। বিকেলে সূর্য পশ্চিম দিকে থাকে বলে রংধনু পূর্ব আকাশে দেখা যায়।
48. চৌম্বক ক্ষেত্র কি?
চৌম্বক ক্ষেত্র (Magnetic Field): চৌম্বক ক্ষেত্র হলো একটি অঞ্চলের এমন বৈশিষ্ট্য যেখানে একটি চুম্বক বা তড়িৎ প্রবাহ দ্বারা চৌম্বক বল প্রয়োগ করা হয়।
সহজভাবে বলতে গেলে, একটি চুম্বক বা একটি বিদ্যুৎ পরিবাহী তারের চারপাশে যে অঞ্চল জুড়ে তার চৌম্বক প্রভাব (আকর্ষণ বা বিকর্ষণ বল) অনুভব করা যায়, সেই অঞ্চলকে চৌম্বক ক্ষেত্র বলে।
* এটি একটি ভেক্টর রাশি, যার মান এবং দিক উভয়ই আছে।
* চৌম্বক ক্ষেত্রের অস্তিত্ব চৌম্বক বলরেখা (Magnetic Field Lines) দ্বারা প্রকাশ করা হয়, যা উত্তর মেরু থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণ মেরুতে শেষ হয়।
* চৌম্বক ক্ষেত্রের তীব্রতা মেরুগুলির কাছাকাছি সবচেয়ে বেশি থাকে।
* একক: চৌম্বক ক্ষেত্রের এসআই (SI) একক হলো টেসলা (Tesla, T) বা গাউস (Gauss, G)।
49. বায়োগ্যাসের সুবিধা ও অসুবিধা গুলি লেখ।
বায়োগ্যাসের সুবিধা:
* পরিবেশবান্ধব জ্বালানি: এটি নবায়নযোগ্য শক্তির উৎস এবং দহনের সময় জীবাশ্ম জ্বালানির তুলনায় অনেক কম গ্রিনহাউস গ্যাস (কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন) নির্গত করে, ফলে পরিবেশ দূষণ কম হয়।
* বর্জ্য ব্যবস্থাপনা: জৈব বর্জ্য (যেমন গোবর, কৃষি বর্জ্য, পৌর বর্জ্য) কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যায়, যা বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সাহায্য করে এবং আবর্জনার স্তূপ কমায়।
* জৈব সার উৎপাদন: বায়োগ্যাস উৎপাদনের পর অবশেষ (স্লারি) একটি উন্নত মানের জৈব সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে এবং রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমায়।
* গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করা: গ্রামীণ এলাকায় বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপন স্থানীয়দের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে এবং জ্বালানি খরচে সাশ্রয় ঘটায়।
* জ্বালানি নিরাপত্তা: স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত হওয়ায় জ্বালানি আমদানির উপর নির্ভরতা কমে।
* ধোঁয়ামুক্ত রান্না: বাড়িতে রান্নার কাজে বায়োগ্যাস ব্যবহার করলে ধোঁয়াহীন হয়, যা গ্রামীণ মহিলাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমায়।
বায়োগ্যাসের অসুবিধা:
* প্রাথমিক ব্যয়: বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট স্থাপন করার জন্য তুলনামূলকভাবে বেশি প্রাথমিক বিনিয়োগের প্রয়োজন হয়।
* তাপমাত্রা সংবেদনশীলতা: বায়োগ্যাস উৎপাদন প্রক্রিয়া তাপমাত্রার উপর নির্ভরশীল। ঠান্ডা আবহাওয়ায় উৎপাদন কমে যায়।
* প্রযুক্তিগত জ্ঞান: প্ল্যান্টের সঠিক কার্যকারিতার জন্য কিছু প্রযুক্তিগত জ্ঞান এবং রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয়।
* অপরিষ্কার গ্যাস: কাঁচা বায়োগ্যাসে হাইড্রোজেন সালফাইড এবং কার্বন ডাই অক্সাইড থাকে, যা দহনের আগে অপসারণের প্রয়োজন হতে পারে।
* আয়তনের সীমাবদ্ধতা: ছোট প্ল্যান্টগুলিতে উৎপাদিত গ্যাসের পরিমাণ সীমিত হতে পারে, যা বৃহৎ আকারের বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যথেষ্ট নয়।
* গন্ধ: ডাইজেস্টার থেকে মাঝে মাঝে দুর্গন্ধ নির্গত হতে পারে, যা আশেপাশের এলাকার মানুষের জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে।
50. পরাগ মিলনের দুটি সমস্যা উল্লেখ কর।
পরাগমিলনের দুটি সমস্যা হলো:
১. বাহকের অভাব বা নির্ভরশীলতা: বেশিরভাগ ফুলের পরাগমিলন বাহকের উপর (যেমন - পতঙ্গ, পাখি, বায়ু, জল) নির্ভরশীল। যদি পরিবেশগত পরিবর্তন, কীটনাশকের ব্যবহার, বা বাসস্থান ধ্বংসের কারণে এই বাহকগুলির সংখ্যা কমে যায় বা তারা নির্দিষ্ট স্থানে অনুপলব্ধ হয়, তবে পরাগমিলন ব্যাহত হয়। উদাহরণস্বরূপ, মৌমাছির সংখ্যা কমে যাওয়া অনেক ফসলের পরাগমিলনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
২. প্রতিকূল পরিবেশগত অবস্থা: তীব্র বায়ু, ভারী বৃষ্টিপাত, অত্যধিক তাপমাত্রা বা অস্বাভাবিক ঠান্ডা তাপমাত্রা পরাগমিলন প্রক্রিয়ায় বাধা দিতে পারে। যেমন, প্রবল বৃষ্টি পরাগরেণুকে ধুয়ে ফেলতে পারে বা পতঙ্গ বাহকদের কার্যকলাপ ব্যাহত করতে পারে, যা সফল পরাগমিলনে বাধা সৃষ্টি করে।
51. উদাহরণসহ রূপান্তরিত কাণ্ড বলতে কী বোঝায় লেখ।
রূপান্তরিত কাণ্ড (Modified Stem): কিছু উদ্ভিদে, বিশেষ কাজ সম্পন্ন করার জন্য কাণ্ড তার স্বাভাবিক রূপ (যেমন - ডালপালা, পাতা, ফুল ধারণ করা) পরিবর্তন করে বিশেষ আকৃতি ধারণ করে। কাণ্ডের এই পরিবর্তিত রূপকে রূপান্তরিত কাণ্ড বলে। এই রূপান্তর সাধারণত খাদ্য সঞ্চয়, অঙ্গজ জনন, আরোহণ বা প্রতিকূল পরিবেশ থেকে বাঁচার জন্য ঘটে থাকে।
উদাহরণ:
* ভূনিম্নস্থ রূপান্তরিত কাণ্ড (Underground Modified Stem):
* স্ফীতকন্দ (Tuber): এটি মাটির নিচে স্ফীত হয়ে খাদ্য সঞ্চয় করে। যেমন: আলু (Potato)। আলুর চোখগুলি হলো কাক্ষিক মুকুল।
* গ্রন্থিকন্দ (Rhizome): এটি মাটির নিচে অনুভূমিকভাবে বৃদ্ধি পায় এবং খাদ্য সঞ্চয় করে। যেমন: আদা (Ginger), হলুদ (Turmeric)। এদের পর্ব ও পর্বসন্ধি স্পষ্ট।
* গুঁড়িকন্দ (Corm): এটি মাটির নিচে উলম্বভাবে বৃদ্ধি পায় এবং খাদ্য সঞ্চয় করে। এটি দেখতে পেঁয়াজের মতো, কিন্তু সম্পূর্ণ কাণ্ডই স্ফীত হয়। যেমন: ওল (Amorphophallus), কচু (Colocasia)।
* কন্দ (Bulb): এটি মাটির নিচে স্ফীত কাণ্ড, যা রসালো শল্কপত্র দ্বারা আবৃত থাকে। যেমন: পেঁয়াজ (Onion), রসুন (Garlic)।
* বায়বীয় রূপান্তরিত কাণ্ড (Aerial Modified Stem):
* পত্রকন্টক (Thorns): কাণ্ডের কাক্ষিক মুকুল কাঁটায় রূপান্তরিত হয় আত্মরক্ষার জন্য। যেমন: লেবু, গোলাপ।
* আকর্ষী (Tendrils): কাণ্ডের কাক্ষিক মুকুল সরু, কুণ্ডলিত সুতার মতো আকর্ষীতে রূপান্তরিত হয় আরোহণের জন্য। যেমন: লাউ, কুমড়ো।
52. অভিস্রবণ বলতে কি বোঝায়? এর একটি গুরুত্ব লেখ।
অভিস্রবণ (Osmosis): অভিস্রবণ হলো একটি বিশেষ ধরনের ব্যাপন প্রক্রিয়া, যেখানে দ্রাবক (সাধারণত জল) অণুগুলি একটি অর্ধভেদ্য পর্দা (Semi-permeable Membrane) ভেদ করে কম ঘনত্বের দ্রবণ (যেখানে দ্রাবকের ঘনত্ব বেশি) থেকে বেশি ঘনত্বের দ্রবণের (যেখানে দ্রাবকের ঘনত্ব কম) দিকে চলাচল করে। যতক্ষণ না উভয় দিকে দ্রাবকের ঘনত্ব সমান হয়, ততক্ষণ এই প্রক্রিয়া চলতে থাকে।
সহজভাবে, যেখানে জলের পরিমাণ বেশি, সেই দিক থেকে যেখানে জলের পরিমাণ কম (কিন্তু দ্রাবের পরিমাণ বেশি) সেই দিকে জলের চলাচলকে অভিস্রবণ বলে, কিন্তু এর জন্য একটি অর্ধভেদ্য পর্দা থাকা আবশ্যক।
এর একটি গুরুত্ব:
* উদ্ভিদে জল শোষণ: উদ্ভিদের মূলরোম দ্বারা মাটি থেকে জল শোষণ অভিস্রবণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ঘটে। মাটি থেকে জল কম ঘনত্বের দ্রবণ থেকে মূলরোমের কোষের (যেখানে কোষ রসের ঘনত্ব বেশি) দিকে প্রবেশ করে। এটি উদ্ভিদের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য।
* কোষের জলীয় ভারসাম্য: জীবদেহের প্রতিটি কোষের অভ্যন্তরে জল এবং লবণের ভারসাম্য বজায় রাখতে অভিস্রবণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি কোষকে অতিরিক্ত জল গ্রহণ করে ফেটে যাওয়া বা জল হারিয়ে শুকিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।
53. পার্থক্য লেখ: প্রাকৃতিক চুম্বক ও কৃত্রিম চুম্বক।
| বৈশিষ্ট্য | প্রাকৃতিক চুম্বক (Natural Magnet) | কৃত্রিম চুম্বক (Artificial Magnet) |
|---|---|---|
| উৎস | প্রকৃতিতে প্রাপ্ত খনিজ পদার্থ (যেমন - ম্যাগনেটাইট বা লোডস্টোন)। | মানবসৃষ্ট উপায়ে তৈরি, যেমন - ইস্পাত বা অ্যালনিকোর মতো সংকর ধাতু দিয়ে তৈরি। |
| আকৃতি | অনিয়মিত এবং অসম আকৃতির হয়। | নির্দিষ্ট জ্যামিতিক আকৃতির হয় (যেমন - দণ্ড চুম্বক, অশ্বক্ষুরাকৃতি চুম্বক, গোলাকার চুম্বক)। |
| চুম্বকত্ব | সাধারণত দুর্বল এবং এর শক্তি পরিবর্তন করা যায় না। | শক্তিশালী এবং এর শক্তি প্রয়োজনে পরিবর্তন করা যায় (যেমন - তড়িৎ চুম্বক)। |
| ব্যবহার | দিক নির্ণয়ের প্রাচীনতম যন্ত্রে ব্যবহৃত হতো, কিন্তু আধুনিক যুগে ব্যবহার সীমিত। | আধুনিক প্রযুক্তিতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় (যেমন - মোটর, জেনারেটর, স্পিকার)। |
| উদাহরণ | লোডস্টোন (ম্যাগনেটাইট)। | দণ্ড চুম্বক, অশ্বক্ষুরাকৃতি চুম্বক, তড়িৎ চুম্বক। |
54. প্রতিফলনের শর্তগুলি লেখ।
প্রতিফলনের দুটি প্রধান শর্ত বা সূত্র রয়েছে:
১. আপতিত রশ্মি, প্রতিফলিত রশ্মি এবং আপতন বিন্দুতে অঙ্কিত অভিলম্ব একই সমতলে থাকে।
* অর্থাৎ, এই তিনটি রেখা একই তলে (যেমন কাগজের তলে) থাকে, কেউ তলের বাইরে থাকে না।
২. আপতন কোণ (Angle of Incidence) সর্বদা প্রতিফলন কোণের (Angle of Reflection) সমান হয়।
* গাণিতিকভাবে: \angle i = \angle r
* যেখানে, \angle i হলো আপতিত রশ্মি এবং অভিলম্বের মধ্যবর্তী কোণ।
* আর \angle r হলো প্রতিফলিত রশ্মি এবং অভিলম্বের মধ্যবর্তী কোণ।
55. পার্শ্ব পরিবর্তন কি? উদাহরণ দিয়ে বোঝাও।
পার্শ্ব পরিবর্তন (Lateral Inversion): পার্শ্ব পরিবর্তন হলো সমতল দর্পণে গঠিত প্রতিবিম্বের একটি বৈশিষ্ট্য, যেখানে বস্তুর ডান দিক প্রতিবিম্বের বাম দিক হিসেবে এবং বস্তুর বাম দিক প্রতিবিম্বের ডান দিক হিসেবে দেখা যায়। অর্থাৎ, প্রতিবিম্বটি উল্টো হয় না (উলম্বভাবে), কিন্তু পার্শ্বীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়।
উদাহরণ:
আপনি যখন একটি সমতল আয়নার সামনে আপনার ডান হাত তোলেন, তখন আপনার প্রতিবিম্বের বাম হাত উঠতে দেখা যায়। একইভাবে, যদি আপনি আয়নার সামনে "AMBULANCE" শব্দটি লেখেন, তবে আয়নার প্রতিবিম্বতে তা উল্টা (পার্শ্বীয়ভাবে পরিবর্তিত) দেখাবে। এই কারণে অ্যাম্বুলেন্স গাড়ির সামনে "AMBULANCE" শব্দটি উল্টা করে লেখা থাকে, যাতে সামনের গাড়ির চালক তার রিয়ার-ভিউ মিররে সঠিক শব্দটি দেখতে পান।
56. আমাদের দেহে জল এবং অক্সিজেন কি কাজ করে?
আমাদের দেহে জল এবং অক্সিজেন উভয়ই অত্যাবশ্যকীয় উপাদান এবং এদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে:
জলের কাজ:
১. দ্রাবক এবং পরিবহন মাধ্যম: জল একটি চমৎকার দ্রাবক। এটি খাদ্য, খনিজ লবণ, ভিটামিন, হরমোন, বর্জ্য পদার্থ ইত্যাদি পরিবহনে সাহায্য করে (যেমন - রক্তে প্লাজমার প্রধান উপাদান জল)।
২. তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ: ঘামের মাধ্যমে শরীর থেকে জল বাষ্পীভূত হয়ে দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
৩. রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ: শরীরের বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় (যেমন - খাদ্য পরিপাক) জল প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করে।
৪. কোষ ও অঙ্গের গঠন: দেহের প্রায় ৫০-৭০% জল দিয়ে গঠিত। কোষ, কলা এবং অঙ্গের গঠন ও কার্যকারিতা বজায় রাখতে জল অপরিহার্য।
৫. লুব্রিকেন্ট ও শক অ্যাবজরবার: জয়েন্টগুলিতে (যেমন - হাঁটু) লুব্রিকেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং চোখ, মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডকে বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা করে।
৬. বর্জ্য অপসারণ: মূত্র এবং মলের মাধ্যমে শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ অপসারণে সাহায্য করে।
অক্সিজেনের কাজ:
১. শ্বসন প্রক্রিয়া: অক্সিজেন জীবের শ্বসন প্রক্রিয়ার জন্য অপরিহার্য। কোষের মাইটোকন্ড্রিয়ায় গ্লুকোজ বা অন্যান্য খাদ্য কণা অক্সিজেনের সাহায্যে জারিত হয়ে শক্তি (ATP) উৎপন্ন করে, যা দেহের সমস্ত জৈবিক ক্রিয়াকলাপের জন্য প্রয়োজন।
২. রক্তে পরিবহন: অক্সিজেন ফুসফুস থেকে রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাধ্যমে শরীরের প্রতিটি কোষে পরিবাহিত হয়।
৩. শারীরিক কার্যকারিতা: মস্তিষ্কের কার্যকারিতা, পেশী সংকোচন এবং অন্যান্য অঙ্গের সঠিক কার্যকলাপের জন্য অবিরাম অক্সিজেন সরবরাহ প্রয়োজন। অক্সিজেনের অভাবে কোষে শক্তির উৎপাদন ব্যাহত হয় এবং কোষের মৃত্যু ঘটতে পারে।
57. ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগের চিকিৎসায় কিভাবে এন্টিবায়োটিক কাজ করে?
ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক (Antibiotics) প্রধানত নিম্নলিখিত উপায়ে কাজ করে:
১. ব্যাকটেরিয়ার কোষ প্রাচীর গঠন ব্যাহত করে (Cell Wall Synthesis Inhibition): অনেক অ্যান্টিবায়োটিক (যেমন - পেনিসিলিন, সেফালোস্পোরিন) ব্যাকটেরিয়ার কোষ প্রাচীর গঠনে বাধা দেয়। ব্যাকটেরিয়া কোষ প্রাচীর ছাড়া বাঁচতে পারে না। যখন কোষ প্রাচীর দুর্বল হয়ে যায় বা তৈরি হতে পারে না, তখন ব্যাকটেরিয়ার কোষ ফেটে যায় এবং মারা যায়। মানব কোষে কোষ প্রাচীর না থাকায়, এই ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক মানব কোষের ক্ষতি করে না।
২. ব্যাকটেরিয়ার প্রোটিন সংশ্লেষণ ব্যাহত করে (Protein Synthesis Inhibition): কিছু অ্যান্টিবায়োটিক (যেমন - টেট্রাসাইক্লিন, এরিথ্রোমাইসিন) ব্যাকটেরিয়ার রাইবোসোমে প্রোটিন তৈরি প্রক্রিয়াকে বাধা দেয়। প্রোটিন ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি, বিভাজন এবং কার্যকারিতার জন্য অপরিহার্য। প্রোটিন সংশ্লেষণ বন্ধ হলে ব্যাকটেরিয়া মারা যায় বা বংশবৃদ্ধি করতে পারে না।
৩. ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ/আরএনএ সংশ্লেষণ ব্যাহত করে (DNA/RNA Synthesis Inhibition): কিছু অ্যান্টিবায়োটিক (যেমন - কুইনোলন, রিফাম্পিন) ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ বা আরএনএ তৈরির প্রক্রিয়াকে বাধা দেয়, যা ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধি ও কার্যকারিতার জন্য অপরিহার্য।
৪. ব্যাকটেরিয়ার ফলিক অ্যাসিড সংশ্লেষণ ব্যাহত করে (Folic Acid Synthesis Inhibition): কিছু অ্যান্টিবায়োটিক (যেমন - সালফোনামাইড) ব্যাকটেরিয়ার ফলিক অ্যাসিড তৈরির পথে বাধা সৃষ্টি করে। ফলিক অ্যাসিড ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ এবং আরএনএ তৈরির জন্য প্রয়োজনীয়, কিন্তু মানব কোষ বাইরে থেকে ফলিক অ্যাসিড গ্রহণ করে, নিজেরা তৈরি করে না।
অ্যান্টিবায়োটিকগুলি ব্যাকটেরিয়াকে মেরে ফেলে (ব্যাকটেরিয়াসাইডাল) বা তাদের বৃদ্ধি ও বংশবৃদ্ধি বন্ধ করে দেয় (ব্যাকটেরিওস্ট্যাটিক), যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে রোগ নিরাময়ে সাহায্য করে। তবে, অ্যান্টিবায়োটিক ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করে না এবং এর যথেচ্ছ ব্যবহার অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধের (Antibiotic Resistance) কারণ হতে পারে।
58. 'AMBULANCE' কথাটি গাড়িতে উল্টে লেখা থাকে কেন?
'AMBULANCE' কথাটি অ্যাম্বুলেন্স গাড়ির সামনে উল্টে (পার্শ্বীয়ভাবে পরিবর্তিত) লেখা থাকে এর কারণ হলো, সামনের গাড়ির চালকরা যখন তাদের রিয়ার-ভিউ মিরর (পেছনের দৃশ্য দেখার আয়না) বা সাইড মিররে অ্যাম্বুলেন্সটিকে দেখেন, তখন তারা সঠিক শব্দটি 'AMBULANCE' হিসেবে পড়তে পারেন।
রিয়ার-ভিউ মিরর এবং সাইড মিররগুলি সাধারণত সমতল দর্পণ বা উত্তল দর্পণ হয়, যা পার্শ্বীয় পরিবর্তন (Lateral Inversion) ঘটায়। অর্থাৎ, যখন আপনি আয়নায় কোনো বস্তুর প্রতিবিম্ব দেখেন, তখন বস্তুর ডান দিকটি প্রতিবিম্বের বাম দিকে এবং বাম দিকটি ডান দিকে দেখায়।
যদি 'AMBULANCE' শব্দটি সরাসরি লেখা থাকত, তাহলে আয়নায় এটি সম্পূর্ণ উল্টে দেখাত এবং দ্রুত পড়া কঠিন হতো। উল্টে লেখার ফলে আয়নার প্রতিফলনে এটি সোজা দেখায়, যা সামনের গাড়ির চালকদের জন্য অ্যাম্বুলেন্স আসার বার্তা দ্রুত এবং স্পষ্টভাবে বুঝতে সাহায্য করে, যাতে তারা অ্যাম্বুলেন্সকে পথ ছেড়ে দিতে পারে। এটি জরুরি অবস্থার জন্য সময় বাঁচানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা।
59. গাছের পাতা কোন গ্যাস ছাড়ে এবং কোন গ্যাস শোষণ করে?
গাছের পাতা সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) গ্যাস শোষণ করে এবং অক্সিজেন (O2) গ্যাস ত্যাগ করে। শ্বসন প্রক্রিয়ায় গাছ অক্সিজেন (O2) গ্রহণ করে ও কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) ত্যাগ করে, তবে দিনের বেলায় সালোকসংশ্লেষের হার শ্বসনের হারের চেয়ে অনেক বেশি হওয়ায় প্রধানত অক্সিজেনই নির্গত হয়।
60. গুঁড়ি কাকে বলে?
সাধারণত, গাছের কাণ্ড যখন মাটির ওপর বৃদ্ধি পেয়ে একটি মোটা ও শক্ত কাঠামোর রূপ নেয়, তখন তাকে গুঁড়ি বলে। এটি গাছকে মাটির উপর খাড়া থাকতে সাহায্য করে এবং জল ও খনিজ পদার্থ পরিবহনে অংশ নেয়।
61. শক্তি সংকট কাকে বলে?
যখন কোনো দেশ বা অঞ্চলে শক্তির চাহিদা, বিশেষত প্রচলিত শক্তির উৎস (যেমন জীবাশ্ম জ্বালানি) থেকে প্রাপ্ত শক্তির সরবরাহের চেয়ে বেশি হয়ে যায়, তখন তাকে শক্তি সংকট বলে। এর ফলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট, জ্বালানির উচ্চ মূল্য এবং অর্থনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিতে পারে।
62. বিক্ষিপ্ত প্রতিফলনে প্রতিবিম্ব গঠিত হয় না কেন?
বিক্ষিপ্ত প্রতিফলনে আলোকরশ্মিগুলি একটি অমসৃণ তল থেকে প্রতিফলিত হওয়ার পর বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে। যেহেতু রশ্মিগুলি কোনো নির্দিষ্ট বিন্দুতে মিলিত হয় না বা মিলিত হচ্ছে বলে মনে হয় না, তাই কোনো সুনির্দিষ্ট প্রতিবিম্ব গঠিত হয় না।
63. জ্বালানি কি?
জ্বালানি হলো এমন কোনো পদার্থ যা পোড়ানো বা অন্য রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাপ ও আলো শক্তি উৎপন্ন করে। যেমন – কাঠ, কয়লা, পেট্রোল, ডিজেল, প্রাকৃতিক গ্যাস ইত্যাদি।
64. একটি চুম্বকের জ্যামিতিক দৈর্ঘ্য ১০ সেমি হলে প্রতিটি মেরু প্রান্ত থেকে কত ভিতরে আছে?
একটি চুম্বকের জ্যামিতিক দৈর্ঘ্য L হলে, এর কার্যকর দৈর্ঘ্য L' প্রায় L'- \frac{5}{6}L হয়। এর অর্থ হলো, মেরু দুটি জ্যামিতিক প্রান্ত থেকে প্রায় 1/12 অংশ ভিতরে থাকে।
যদি জ্যামিতিক দৈর্ঘ্য ১০ সেমি হয়, তাহলে মেরু দুটি প্রায় 10/12 সেমি বা 0.83 সেমি ভিতরে থাকবে।
65. সৌর কোষের দুটি ব্যবহার লেখ?
১. সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন: সৌর কোষ সূর্যরশ্মিকে সরাসরি বিদ্যুতে রূপান্তরিত করে, যা বাড়িঘর, শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে ব্যবহৃত হয়।
২. ক্যালকুলেটর ও খেলনা: ছোট আকারের সৌর কোষগুলি ক্যালকুলেটর, খেলনা এবং অন্যান্য ছোট ইলেকট্রনিক গ্যাজেটগুলিতে শক্তি সরবরাহ করে।
তড়িৎ চুম্বকের মেরু শক্তি বাড়ানোর দুটি উপায় লেখ।
১. কুণ্ডলীতে তড়িৎ প্রবাহ বৃদ্ধি: কুণ্ডলীতে যত বেশি তড়িৎ প্রবাহ (কারেন্ট) পাঠানো হবে, তড়িৎ চুম্বকের মেরু শক্তি তত বাড়বে।
২. কুণ্ডলীর পাক সংখ্যা বৃদ্ধি: কুণ্ডলীতে তারের পাক সংখ্যা বাড়িয়ে তড়িৎ চুম্বকের মেরু শক্তি বৃদ্ধি করা যায়।
স্থানিক ও অস্থানিক মূলের দুটি পার্থক্য লেখ।
১. উৎপত্তি: স্থানিক মূল (Primary Root) সরাসরি ভ্রূণমূল (Radicle) থেকে উৎপন্ন হয়। অন্যদিকে, অস্থানিক মূল (Adventitious Root) ভ্রূণমূল ছাড়া কাণ্ড, পাতা বা শাখা থেকে উৎপন্ন হয়।
২. গঠন: স্থানিক মূল একটি প্রধান মূল এবং তার শাখা মূল নিয়ে গঠিত হয়, যা মাটির গভীরে প্রবেশ করে। অস্থানিক মূল সাধারণত গুচ্ছাকারে উৎপন্ন হয় এবং মাটির উপরিভাগে ছড়িয়ে পড়ে।
শিরবিন্যাস বলতে কী বোঝায়?
শিরবিন্যাস বলতে গাছের পাতায় শিরা এবং উপশিরার বিন্যাসকে বোঝায়। এটি প্রধানত দুই প্রকারের হয় - জালিকাকার শিরবিন্যাস (যেমন: আম পাতা) এবং সমান্তরাল শিরবিন্যাস (যেমন: ধান পাতা)। শিরবিন্যাস গাছের খাদ্য ও জল পরিবহনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
একটি সম্পূর্ণ ও একটি অসম্পূর্ণ ফুলের উদাহরণ দাও।
সম্পূর্ণ ফুল: জবা ফুল। একটি সম্পূর্ণ ফুলে চারটি প্রধান অংশ থাকে - বৃতি, দলমণ্ডল, পুংকেশরচক্র এবং গর্ভকেশরচক্র।
অসম্পূর্ণ ফুল: লাউ ফুল। যে ফুলে এই চারটি অংশের এক বা একাধিক অনুপস্থিত থাকে, তাকে অসম্পূর্ণ ফুল বলে।
খালি বালতির ভিতরে একটি কয়েন রেখে বালতিটি জলপূর্ণ করার পর উপর থেকে দেখলে কয়েন কিছুটা উপরে উঠে এসেছে বলে মনে হয় কেন?
এটি আলোর প্রতিসরণের কারণে ঘটে। জলপূর্ণ বালতিতে কয়েন থাকলে, কয়েন থেকে আলোকরশ্মি জলে প্রবেশ করে এবং তারপর জল থেকে বায়ুতে বেরিয়ে আসার সময় প্রতিসরিত হয় (বেঁকে যায়)। এই প্রতিসরিত রশ্মিগুলি যখন আমাদের চোখে পৌঁছায়, তখন আমাদের মস্তিষ্ক তাদের সোজা পথে আসা বলে মনে করে। ফলে কয়েনটি তার আসল অবস্থান থেকে কিছুটা উপরে উঠে এসেছে বলে মনে হয়।
পদার্থের উপাদান ঘনত্ব বা প্রাকৃতিক ঘনত্ব এবং আলোকীয় ঘনত্ব পরস্পর নিরপেক্ষ দুটি রাশি বক্তব্যে সাপেক্ষে যুক্তি দেখাও।
হ্যাঁ, পদার্থের উপাদান ঘনত্ব (বা প্রাকৃতিক ঘনত্ব) এবং আলোকীয় ঘনত্ব পরস্পর নিরপেক্ষ দুটি রাশি।
* উপাদান ঘনত্ব: এটি কোনো বস্তুর ভর ও আয়তনের অনুপাত, যা বস্তুর প্রতি একক আয়তনে পদার্থের পরিমাণ নির্দেশ করে (যেমন: জল = ১ গ্রাম/সিসি)। এটি বস্তুর ভর এবং আকারের ওপর নির্ভরশীল।
* আলোকীয় ঘনত্ব: এটি কোনো মাধ্যমের মধ্যে দিয়ে আলো কতটা ধীর গতিতে চলে তার পরিমাপ। যে মাধ্যমে আলোর গতি কম, তার আলোকীয় ঘনত্ব বেশি (যেমন: জল > বায়ু)। এটি মাধ্যমের প্রতিসরাঙ্কের উপর নির্ভরশীল।
উদাহরণস্বরূপ, তার্পিন তেলের উপাদান ঘনত্ব জলের চেয়ে কম হলেও এর আলোকীয় ঘনত্ব জলের চেয়ে বেশি। অর্থাৎ, তার্পিন তেল জলে ভাসে, কিন্তু তার মধ্যে আলোর গতি জল অপেক্ষা ধীর। এটি প্রমাণ করে যে, এই দুটি ধারণা পরস্পর নিরপেক্ষ।
আবেশী চুম্বক ও আবিষ্ট চুম্বক কাকে বলে?
* আবেশী চুম্বক: যে চুম্বক তার চারপাশের চৌম্বক ক্ষেত্র দ্বারা অন্য কোনো চৌম্বক পদার্থে সাময়িকভাবে চৌম্বকত্বের সৃষ্টি করে, তাকে আবেশী চুম্বক বলে। এটি একটি স্থায়ী চুম্বক বা তড়িৎ চুম্বক হতে পারে।
* আবিষ্ট চুম্বক: যখন কোনো চৌম্বক পদার্থ (যেমন: লোহা, নিকেল) কোনো চুম্বকের কাছাকাছি আনা হয়, তখন সেই পদার্থটিও সাময়িকভাবে চুম্বকে পরিণত হয়। এই সাময়িক চুম্বককে আবিষ্ট চুম্বক বলে। আবিষ্ট চুম্বকের মেরুতা আবেশী চুম্বকের কাছাকাছি মেরুর বিপরীত হয়।
অভিসারী ও অপসারী রশ্মি গুচ্ছের ছবি এঁকে দেখাও।
(এই অংশে ছবি আঁকা সম্ভব নয়, তবে বর্ণনা দেওয়া হলো।)
* অভিসারী রশ্মি গুচ্ছ: এই রশ্মি গুচ্ছের ক্ষেত্রে, আলোর একাধিক রশ্মি একটি নির্দিষ্ট বিন্দুতে এসে মিলিত হয় বা মিলিত হচ্ছে বলে মনে হয়। তীরচিহ্নগুলি একটি বিন্দুর দিকে নির্দেশ করবে।
* অপসারী রশ্মি গুচ্ছ: এই রশ্মি গুচ্ছের ক্ষেত্রে, আলোর একাধিক রশ্মি একটি নির্দিষ্ট বিন্দু থেকে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে। তীরচিহ্নগুলি একটি বিন্দু থেকে বাইরের দিকে নির্দেশ করবে।
প্রচ্ছায়া ও উপচ্ছায়া কাকে বলে?
* প্রচ্ছায়া (Umbra): যখন আলোর উৎসের সামনে কোনো অস্বচ্ছ বস্তু রাখা হয়, তখন বস্তুর পিছনে একটি সম্পূর্ণ অন্ধকার অঞ্চল তৈরি হয় যেখানে আলো একেবারেই পৌঁছাতে পারে না। এই অন্ধকার অংশকে প্রচ্ছায়া বলে। এটি তীক্ষ্ণ এবং সুস্পষ্ট হয়।
* উপচ্ছায়া (Penumbra): প্রচ্ছায়ার চারপাশে একটি আংশিক অন্ধকার অঞ্চল থাকে, যেখানে আলোর উৎস থেকে কিছু আলো পৌঁছাতে পারে, কিন্তু সম্পূর্ণ আলো পৌঁছাতে পারে না। এই অপেক্ষাকৃত হালকা অন্ধকার অংশকে উপচ্ছায়া বলে।
বায়ুকল বসানোর দুটি উপকারী দিক লেখ।
১. নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদন: বায়ুকল বায়ুর শক্তিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করে, যা একটি নবায়নযোগ্য এবং অফুরন্ত উৎস। এটি জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরতা কমায়।
২. পরিবেশবান্ধব: বায়ুকল বিদ্যুৎ উৎপাদনের সময় কোনো গ্রিনহাউস গ্যাস বা ক্ষতিকারক দূষণকারী পদার্থ নির্গত করে না, ফলে এটি পরিবেশের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
তোমার কাছে একটি দন্ড চুম্বক আছে, চুম্বকটি মাঝামাঝি ভেঙ্গে দিলে মোট কতগুলি চুম্বক মেরু থাকবে - বুঝিয়ে লেখ।
যদি একটি দণ্ড চুম্বককে মাঝামাঝি ভেঙে দেওয়া হয়, তাহলেও প্রতিটি টুকরা নিজেই একটি সম্পূর্ণ চুম্বকে পরিণত হবে এবং তার নিজস্ব উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরু থাকবে। সুতরাং, একটি দণ্ড চুম্বককে মাঝামাঝি ভেঙে দিলে মোট চারটি চুম্বক মেরু থাকবে - প্রতিটি নতুন টুকরার দুটি করে মেরু। এর কারণ হলো, চুম্বকত্বের উৎস এর অণুর মধ্যে নিহিত, তাই চুম্বককে যত ছোট টুকরো করা হোক না কেন, প্রতিটি টুকরোই নিজস্ব মেরু তৈরি করবে।
কিসমিস কে জলে ভিজিয়ে রাখলে ফুলে ওঠে কেন?
কিসমিসের ভেতরের উপাদান ঘনত্ব বাইরের জলের চেয়ে বেশি। যখন কিসমিসকে জলে ভিজিয়ে রাখা হয়, তখন অভিস্রবণ (Osmosis) প্রক্রিয়ায় জল কিসমিসের অর্ধভেদ্য পর্দা ভেদ করে কিসমিসের ভিতরে প্রবেশ করে। এটি ঘটে কারণ জলের অণুগুলি উচ্চ ঘনত্বের অঞ্চল (বালতির জল) থেকে নিম্ন ঘনত্বের অঞ্চলের (কিসমিসের ভিতরের জল) দিকে প্রবাহিত হয় যতক্ষণ না উভয় দিকের ঘনত্ব সমান হয় বা চাপ এতটাই বেড়ে যায় যে জলের প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। এই জল শোষণ করার ফলে কিসমিস ফুলে ওঠে।
মৃদভেদী ও মৃদবর্তী অঙ্কুরোদগম ঘটে এমন দুটি উদ্ভিদের নাম লেখ।
* মৃদভেদী অঙ্কুরোদগম (Epigeal Germination): এই অঙ্কুরোদগমে বীজপত্র মাটি ভেদ করে উপরে উঠে আসে। উদাহরণ: রেড়ি ও মটর।
* মৃদবর্তী অঙ্কুরোদগম (Hypogeal Germination): এই অঙ্কুরোদগমে বীজপত্র মাটির নিচেই থাকে এবং ভ্রূণাক্ষ (Hypocotyl) বৃদ্ধি পেয়ে উপরে উঠে আসে। উদাহরণ: ধান ও গম।
জবা ফুলের গর্ভকেশর চক্রের ছবি এঁকে বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত করো।
(এই অংশে ছবি আঁকা সম্ভব নয়, তবে বর্ণনা এবং চিহ্নিতকরণের তথ্য দেওয়া হলো। আপনি এই বিবরণ অনুযায়ী একটি ছবি আঁকতে পারেন।)
জবা ফুলের গর্ভকেশর চক্রকে (Pistil/Carpel) আঁকতে হলে নিম্নলিখিত অংশগুলি চিহ্নিত করতে হবে:
১. গর্ভমুণ্ড (Stigma): এটি গর্ভকেশরের সবচেয়ে উপরের অংশ, সাধারণত আঠালো এবং পরাগরেণু আটকে রাখতে সাহায্য করে। জবা ফুলের গর্ভমুণ্ড সাধারণত ৫টি খণ্ডে বিভক্ত হয়।
২. গর্ভদণ্ড (Style): এটি গর্ভমুণ্ডের ঠিক নিচের লম্বা, সরু অংশ যা গর্ভাশয়কে গর্ভমুণ্ডের সাথে যুক্ত করে। জবা ফুলে একটি দীর্ঘ গর্ভদণ্ড দেখা যায়, যা পুংকেশরের নলের মধ্য দিয়ে যায়।
৩. গর্ভাশয় (Ovary): এটি গর্ভদণ্ডের নিচের স্ফীত অংশ, যা ডিম্বাণু ধারণ করে। গর্ভাশয়ের ভিতরে ডিম্বক (Ovules) থাকে, যা নিষিক্ত হওয়ার পর বীজে পরিণত হয়। জবা ফুলের গর্ভাশয় সাধারণত ৫টি প্রকোষ্ঠে বিভক্ত থাকে।
জৈব গ্যাস বা বায়ো গ্যাস কাকে বলে?
জৈব গ্যাস বা বায়ো গ্যাস হলো এক ধরনের জ্বালানি গ্যাস যা জৈব পদার্থ (যেমন - গোবর, ফসলের অবশিষ্টাংশ, আবর্জনা) অক্সিজেনবিহীন পরিবেশে (অ্যানারোবিক হজম প্রক্রিয়ায়) অণুজীব দ্বারা পচানোর ফলে উৎপন্ন হয়। এই গ্যাসে প্রধানত মিথেন (CH4) এবং কার্বন ডাই অক্সাইড (CO2) থাকে। এটি রান্নার কাজে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে এবং যানবাহনে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
- গাছের পাতা কোন গ্যাস ছাড়ে এবং কোন গ্যাস শোষণ করে?
- গুঁড়ি কাকে বলে?
- শক্তি সংকট কাকে বলে?
- বিক্ষিপ্ত প্রতিফলনে প্রতিবিম্ব গঠিত হয় না কেন?
- জ্বালানি কি?
- একটি চুম্বকের জ্যামিতিক দৈর্ঘ্য ১০ সেমি হলে প্রতিটি মেরু প্রান্ত থেকে কত ভিতরে আছে?
- সৌর কোষের দুটি ব্যবহার লেখ?
- তড়িৎ চুম্বকের মেরু শক্তি বাড়ানোর দুটি উপায় লেখ।
- স্থানিক ও অস্থানিক মূলের দুটি পার্থক্য লেখ।
- শিরবিন্যাস বলতে কী বোঝায়?
- একটি সম্পূর্ণ ও একটি অসম্পূর্ণ ফুলের উদাহরণ দাও।
- খালি বালতির ভিতরে একটি কয়েন রেখে বালতিটি জলপূর্ণ করার পর উপর থেকে দেখলে কয়েন কিছুটা উপরে উঠে এসেছে বলে মনে হয় কেন?
- পদার্থের উপাদান ঘনত্ব বা প্রাকৃতিক ঘনত্ব এবং আলোকীয় ঘনত্ব পরস্পর নিরপেক্ষ দুটি রাশি বক্তব্যে সাপেক্ষে যুক্তি দেখাও।
- আবেশী চুম্বক ও আবিষ্ট চুম্বক কাকে বলে?
- অভিসারী ও অপসারী রশ্মি গুচ্ছের ছবি এঁকে দেখাও।
- প্রচ্ছায়া ও উপচ্ছায়া কাকে বলে?
- বায়ুকল বসানোর দুটি উপকারী দিক লেখ।
- তোমার কাছে একটি দন্ড চুম্বক আছে, চুম্বকটি মাঝামাঝি ভেঙ্গে দিলে মোট কতগুলি চুম্বক মেরু থাকবে - বুঝিয়ে লেখ।
- কিসমিস কে জলে ভিজিয়ে রাখলে ফুলে ওঠে কেন?
- মৃদভেদী ও মৃদবর্তী অঙ্কুরোদগম ঘটে এমন দুটি উদ্ভিদের নাম লেখ।
- জবা ফুলের গর্ভকেশর চক্রের ছবি এঁকে বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত করো।
- জৈব গ্যাস বা বায়ো গ্যাস কাকে বলে?
